রোম, ইতালিঃ গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় ০৮ আগষ্ট ২০২৩ বাংলাদেশ দূতাবাস রোমে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব-এঁর ৯৩তম জন্মবার্ষিকী এবং তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল-এঁর ৭৪তম জন্মবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়। আয়োজিত অনুষ্ঠানসূচির মধ্যে ছিল বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব-এঁর এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল-এঁর প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ কর্তৃক পুস্পস্তবক অর্পণ, তাঁদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে ১ (এক) মিনিট নিরবতা পালন, বাণী পাঠ, তাঁদের জীবনের উপর নির্মিত প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন, আলাচনা সভা এবং বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত।
ইতালি, মন্টেনিগ্রো ও সার্বিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জনাব মোঃ শামীম আহসান শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এবং ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ কালরাতে নিহত সকল শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শহিদ শেখ ফজিলাতুন নেছা-এঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে রাষ্ট্রদূত বলেন যে বঙ্গমাতার আদর্শ বাঙ্গালি নারীদের কাছে সবসময় অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে বিবেচিত হবে। জনাব আহসান আরো বলেন যে, নিভৃতচারী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর সাথে চিরদিন ছায়ার মতো থেকেছেন এবং বঙ্গবন্ধুকে জাতীয় ইতিহাসের বিভিন্ন রাজনৈতিক সংকটময় ও কঠিন মুহূর্তে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে নীরবে সহায়তা করে গিয়েছেন। রাষ্ট্রদূত আরো বলেন যে, স্বাধীনতা পরবর্তী দেশ বিনির্মাণেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। রাষ্ট্রদূত সকলকে বঙ্গমাতার আদর্শে অনুপ্রাণিত হওয়ার আহবান জানান। বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব-এঁর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনায় সুধীজন বঙ্গমাতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে তাঁর আদর্শ অনুসরণের উপর জোর দেন।
শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল-এঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে মান্যবর রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে বলেন, বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক হিসেবে ছাত্রসমাজকে সংগঠিত করে মহান মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখ সমরে অংশগ্রহণ করেন। তিনি আরও জানান, স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে শেখ কামালের অবদান অনস্বীকার্য। বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনায় প্রবাসী নেতৃবৃন্দ তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাংলাদেশের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে শেখ কামালের সুদূরপ্রসারী ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার অভিযাত্রায় তাঁর প্রদর্শিত পথ, আদর্শ এবং দিক-নির্দেশনা আজও এক অনুকরণীয় মডেল মর্মে বক্তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠান শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, ক্যাপ্টেন শেখ কামালসহ পরিবারের সমস্ত শহিদ এবং মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা ও দেশের অব্যাহত সমৃদ্ধি ও উন্নতি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।
দূতাবাসের প্রথম সচিব জনাব আসিফ আনাম সিদ্দিকী অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন। অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও বীর মুক্তিযোদ্ধা, ইতালি আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, বিপুল সংখ্যক রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং গণমাধ্যম কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠান শেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের আপ্যায়িত করা হয়।