জেনেভা, ২৬ মার্চ ২০২০:
যথাযথ মর্যাদায় ও আনন্দমুখর পরিবেশে সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশন মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করেছে। আজ বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় দূতাবাস প্রাঙ্গণে জেনেভাস্থ জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং সুইজারল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোঃ শামীম আহসান জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে এই কর্মসূচির সূচনা করেন। এসময় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের পক্ষ থেকে এক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। এসময় মুজিববর্ষের প্রেক্ষাপটে গণহত্যা দিবস ও মহান স্বাধীনতা দিবসের উপর এক উন্মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
রাষ্ট্রদূত আহসান তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই সকলকে মহান স্বাধীনতা দিবস ও মুজিববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহিদ ও স্বাধীনতা যুদ্ধে সম্ভ্রমহারা মা-বোনদের প্রতি অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, “সার্বিক মুক্তির মধ্য দিয়ে একটি উদার, উন্নত, অবদানক্ষম, সমতাভিত্তিক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তোলা ছিল মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্য। মুজিববর্ষের এই শুভ-ক্ষণে দাঁড়িয়ে সেই অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে আমাদের সম্মিলিত শপথ ও অঙ্গীকারকে আরও শাণিত করতে হবে।” তিনি মুক্তিযুদ্ধের সুমহান চেতনা এবং বঙ্গবন্ধুর অনুপম মহৎ আদর্শকে বুকে ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অদম্য উন্নয়ন যাত্রায় শামিল হতে সকলের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান। তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত ২৫ মার্চ 2020 তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে এ সার্বিক অবস্থার প্রেক্ষিতে অত্যন্ত যুগান্তকারী এবং যুগোপযোগী যে ব্যবস্থাপনা দরকার সে বিষয়ে তিনি প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। দেশের স্বার্থে আমাদের এ দিকনির্দেশনা মেনে চলা উচিৎ। এছাড়া, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাকে গড়ে তোলার জন্য আজ যেটি বেশি প্রয়োজন তা হলো সহমর্মিতা ও সচেতনতা। আমরা প্রবাসী বাংলাদেশী ভাই-বোনদের খোজ-খবর রাখছি। আশা করছি সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এ বিপর্যয় থেকে বের হয়ে আসতে পারব”।
পরিশেষে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে জেনেভাস্থ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন বছরব্যাপী যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তার মধ্যে অন্যতম ছিল মহাসমারোহে এ বছরের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন। কিন্তু, মহামারী করোনা ভাইরাসের দরুণ সুইজারল্যান্ড সরকার কর্তৃক সকল প্রকার জনসমাগম নিষিদ্ধ করার প্রেক্ষিতে অনুষ্ঠানের আকার ও প্রকৃতিতে পরিবর্তন এনে দিবসটি উদযাপন করা হয়।