ব্রাসেলস্, ১০ জানুয়ারি ২০২১ছ
নতুন প্রজন্মের হৃদয় ও মননে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লক্ষ্য ও আদর্শ ধারণ করার ক্ষেত্রে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারে বলে উল্লেখ করেছেন বেলজিয়ামে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব হাসান সালেহ্। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের ৪৯তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ দূতাবাস, ব্রাসেলস্ কর্তৃক আয়োজিত "বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকল্প" শীর্ষক ভার্চুয়াল প্যানেল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত সালেহ্-এর সঞ্চালনায় উক্ত আলোচনায় আলোচক হিসাবে বক্তব্য রাখেন আবুধাবিস্থ জায়েদ ইউনিভার্সিটির সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. হাবিবুল হক খন্দকার, দিল্লি হতে প্রকাশিত দি টাইমস অব ইন্ডিয়ার কূটনৈতিক সম্পাদক ইন্দ্রানী বাগচী এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন পরামর্শক, রবীন্দ্র গবেষক ও শিল্পী ড. চঞ্চল খান।
মূল আলোচনার পূর্বে রাষ্ট্রদূত জনাব সালেহ এবং যুক্তরাষ্ট্রের আলবানি মেডিকেল কলেজের ইমিরেটাস অধ্যাপক ও ২০১৩ সালে "মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা" প্রাপ্ত ড. ডেভিড নালিন-এর মধ্যকার আলোচনার সম্প্রতি ধারণকৃত একটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারিতে ঢাকার তেঁজগাও বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশের মাটিতে পা রাখার মুহূর্তটিকে স্বচক্ষে দেখার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন ড. নালিন। এছাড়া তিনি মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যদের কাছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রচারণা চালানোর লক্ষ্যে ওয়াশিংটন ডিসি-তে তাঁর প্রতিষ্ঠিত ‘‘বাংলাদেশ তথ্য কেন্দ্র’’-এর কার্যক্রম সম্পর্কে বঙ্গবন্ধুর সাথে পরবর্তী সময়ে সাক্ষাৎ করে তাঁকে অবহিত করার বিষয়ে স্মৃতিচারণা করেন।
আলোচনাকালে ড: হাবিবুল হক খন্দকার স্বাধীনতা ও মুক্তির অন্যতম মূল স্তম্ভ হিসেবে সামাজিক ন্যায়বিচার এবং সমতাকে গ্রহণের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর বাস্তববাদী রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির কথা তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক দূরদর্শিতার কথা উল্লেখ করে ইন্দ্রানী বাগচী বলেন, বঙ্গবন্ধু বিশ্ব শান্তিকে তাঁর পররাষ্ট্র নীতির মূল লক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেই ‘‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়’’- নীতি গ্রহণ করেছিলেন।
ড. চঞ্চল খান বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক পরিকল্পনার বিষয়ে তুলে ধরে বলেন, কৃষি সংস্কার এবং শিল্পায়নের বিকাশ-এই দুইয়ের সমন্বয়ের মাধ্যমে তিনি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলদেশকে পুর্নগঠনে একটি কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। একই সাথে তিনি একটি ধর্ম-নিরপেক্ষ এবং প্রগতিশীল শিক্ষা ও সংস্কৃতির নীতি-পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন।
রাষ্ট্রদূত মাহবুব হাসান সালেহ্ বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য ও আদর্শ বাস্তবায়নে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে অতীতের নানা বিচ্যুতি কাটিয়ে বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনায় পরিচালিত করা এবং একটি সমৃদ্ধ ও আধুনিক দেশে উন্নীত করার বিবিধ উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো একজন আইকনিক বিশ্ব নেতাকে আন্তর্জাতিক পরিসরে উপস্থাপনের সুযোগ বাংলাদেশের কূটনীতিকদের জন্য অত্যন্ত সম্মান ও গৌরবের বিষয়।
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। জুম প্লাটফর্মে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানটি দূতাবাস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজ হতে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। এতে ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত হতে দেশি ও বিদেশী ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।