১৫ আগস্ট ২০২৩, রোজ মঙ্গলবার, রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারবর্গের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও “জাতীয় শোক দিবস” পালন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, মলদোভা ও উত্তর মেসিডোনিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব মোঃ দাউদ আলী। অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল লক্ষ্যনীয়।
প্রথমার্ধে, মান্যবর রাষ্ট্রদূতের উপস্থিতিতে দূতাবাস প্রাঙ্গনে সকাল ৯.০০ টায় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। সন্ধ্যা ৬.০০ টায় দ্বিতীয়ার্ধের অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুরুতেই জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারবর্গের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের উদ্দেশে ০১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর মান্যবর রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানো হয়। অতঃপর দিবসটি উপলক্ষ্যে যথাক্রমে বঙ্গভবন থেকে প্রেরিত মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রেরিত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বাণী এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে প্রেরিত মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।
মান্যবর রাষ্ট্রদূত তাঁর স্বাগত বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে মহান নেতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি বঙ্গবন্ধুর সংক্ষিপ্ত জীবনী ও বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আলোচনা করেন। তিনি বলেন যে, বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু ছিলেন আপোষহীন, এজন্যই তাঁকে বারবার কারাবরণ করতে হয়েছে। তিনি একটি শোষিত, বঞ্চিত, পরাধীন জাতিকে স্বাধীনতার লাল সূর্য উপহার দেয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুর একক নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন যে, বঙ্গবন্ধু শুধু বাঙালি জাতিরই নয়, তিনি ছিলেন বিশ্বের সকল নিপীড়িত,শোষিত ও বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায় ও মুক্তি সংগ্রামের অগ্রনায়ক। উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্য বিপথগামী সেনাসদস্যদের দ্বারা শহীদ হন।
এছাড়াও, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার নির্দেশিত পথে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রবাসী সকলকে স্ব স্ব অবস্থান থেকে কাজ করার আহ্বান জানান। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি করতে তিনি উৎসাহিত করেন। রোমানিয়া থেকে পলায়ন করে অথবা অবৈধভাবে অন্য ইউরোপীয় দেশে যাত্রা না করার জন্য তিনি সকলকে বিনীত অনুরোধ করেন। এছাড়া, বাংলাদেশি শিক্ষার্থী কমিউনিটিকেও নানা দিক নির্দেশনামূলক পরামর্শ দেন। সবশেষে, জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারবর্গ, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের রুহের মাগফেরাত, জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দীর্ঘায়ু ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়ন অগ্রযাত্রা কামনা করে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত শেষে সকল অতিথিবৃন্দকে নৈশভোজে আপ্যায়ন করা হয়।