করাচি, ২৮ এপ্রিল ২০২৩:
বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন করাচি বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ২৮ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে বাংলা নববর্ষ-১৪৩০ উদযাপন করেছে। পহেলা বৈশাখ-১৪৩০ উদযাপন উপলক্ষে চ্যান্সারি ভবন ব্যানার, ফেস্টুন, বেলুন ইত্যাদি দিয়ে সুসজ্জিত করা হয়। অনুষ্ঠানে করাচিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি ও তাদের পরিবারবর্গ, করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকগণ ও বাংলা বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সমাজকর্মী, সাংবাদিক, স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং করাচিস্থ নজরুল একাডেমির শিল্পীগণ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলা নববর্ষ-১৪৩০ উদযাপন উপলক্ষে চ্যান্সারি ভবনের অভ্যন্তরে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রথম সচিব জনাব মোঃ আরিফ এলাহী এর সঞ্চালনায় এবং উপ-হাইকমিশনার জনাব এস.এম. মাহবুবুল আলমের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। স্বাগত বক্তব্যের শুরুতেই উপ-হাইকমিশনার জনাব এস.এম. মাহবুবুল আলম গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। এছাড়াও তিনি বিনম্র শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন জাতীয় চার নেতা, ত্রিশ লক্ষ শহিদ, সম্ভ্রমহারা দুই লক্ষ মা-বোন এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাঁদের মহান আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন করে। তিনি তাঁর বক্তব্যে সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। তিনি বাংলা নববর্ষকে বাঙ্গালি জাতির অসাম্প্রদায়িক চেতনার উৎস এবং একান্তই আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের শাশ্বত বাহক হিসেবে অনন্য এক উদ্যাপন বলে উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও তিনি বাংলা নববর্ষের গুরুত্ব অনুধাবন করে বলেন যে, পহেলা বৈশাখ বাঙ্গালি জাতির চিরায়িত প্রানের উৎসব, যেখানে দুঃখ-জরা,ব্যর্থতা ও মলিনতা ভূলে জাতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলে একসাথে অত্যন্ত আনন্দচিত্তে দিনটি উদযাপন করে থাকে। পরিশেষে তিনি সকলকে অত্র উপ-হাইকমিশন আয়োজিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগের আমন্ত্রণ জানিয়ে তার স্বাগত বক্তব্য শেষ করেন।
বর্ষবরণ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে আয়োজিত সাংস্কৃতিক পর্বের প্রথমেই উপ-হাইকমিশনের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও তাদের পরিবারর্গের সমন্বয়ে সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগিত ও ‘এসো হে বৈশাখ’ গান পরিবেশনার মধ্য দিয়ে বাংলা নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়। এ পর্বে উপ-হাইকমিশনের কর্মকর্তাগণ ও তাদের পরিবারের সদস্যগণ এবং করাচিস্থ নজরুল একাডেমির শিল্পীরা লোক সঙ্গীত, রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুল গীতি, কবিতা ও নৃত্য পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানে শিশু-কিশোরদের জন্য খেলাধুলার আয়োজন করা হয় এবং উপ-হাইকমিশনার জনাব এস.এম. মাহবুবুল আলম বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে উপ-হাইকমিশনার জনাব এস.এম. মাহবুবুল আলম তার সমাপনী বক্তব্যে বাংলা নববর্ষের এ বিশেষদিনে সকলকে তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মানে ভূমিকা রাখার আহবান জানান। তিনি বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করা জন্য আগত অতিথিবৃন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
পরিশেষে, উপস্থিত অতিথিদের ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন ধরণের খাবার বিশেষ করে মাছ, বিভিন্ন রকমের ভর্তা, হরেক রকমের পিঠাপুলি ও মিষ্ঠান্ন দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।