২৬শে মার্চ ২০২৩, আবুধাবি:
আবুধাবিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয়। দূতাবাস ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দূতাবাসে কর্মরত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ জনতা ব্যাংক লি, বাংলাদেশ বিমান, বাংলাদেশ স্কুল, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার স্থানীয় প্রতিনিধিবৃন্দ এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী উপস্থিত ছিলেন।
আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। এরপর, মান্যবর রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক স্থাপন করা হয়। উপস্থিত বিভিন্ন সংগঠন এবং ব্যক্তিবর্গ অতঃপর শ্রদ্ধাবেদীতে পুষ্পার্ঘ নিবেদন করেন। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা সভা শুরু হয় । দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনান। অনুষ্ঠানে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এরপর, দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা পর্বে প্রবাসী বাংলাদেশীগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়েছিল। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু মাতৃভূমিকে মুক্ত করার ডাক দিয়েছিলেন। তিনি শত্রুসেনাদের বিতাড়িত করতে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়াই করার আহ্বান জানান।
মান্যবর রাষ্ট্রদূত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে তাঁর বক্তব্য শুরু করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নির্যাতিতা বীরাঙ্গনাদের অবদানের কথা সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন যাদের চূড়ান্ত আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা চিরকাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জন করি যার পুরোধা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীনতা ঘোষণার পর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানের কারাগারে দীর্ঘ ৯ মাস বঙ্গবন্ধুকে বন্দি করে রাখা হয়। পাকিস্তানি পরাধীনতা থেকে মুক্তির লড়াইয়ে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়। ৯ মাসের যুদ্ধে এত বেশি মানুষ হত্যার ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন অভিযাত্রা এবং বাংলাদেশের অর্জনসমূহ উপস্থাপন করে তিনি জাতির পিতার সুখী, সমৃদ্ধ, শোষণ ও বৈষম্যহীন স্বপ্নের ‘সোনারবাংলা’ বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ‘ভিশন-২০৪১’ বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয়ে সকলকে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ থাকার অনুরোধ করেন এবং সকল প্রবাসীকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখার আহ্বান জানান।
পরিশেষে, বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ই আগষ্ট ১৯৭৫ শাহাদত বরণকারী তাঁর পরিবারের সদস্যগণ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা, এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশের আরও সমৃদ্ধি ও উন্নতি কামনা করে বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়।
উল্লেখ্য, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে দূতাবাস ০৭ মার্চ সন্ধ্যায় স্থানীয় একটি হোটেলে রিসিপশনের আয়োজন করেছিলো। সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জনাব আহমেদ আলি আল সাইখ প্রধান অতিথি হিসেবে উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পশ্চিম এশিয়া বিভাগের পরিচালকসহ সরকারী কর্মকর্তা, বিদেশী কূটনীতিকবৃন্দ, সিআইপিগণ, পেশাজীবীসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এ রিসিপশনে যোগদেন। ২৬শে মার্চ এবছর পবিত্র রমযান মাস হওয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশক্রমে রমযানের পূর্বেই এ রিসিপশন আয়োজন করা হয়।