ইসলামাবাদ, ০৫ আগস্ট, ২০২৩:
ইসলামাবাদস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন ৫ আগস্ট ২০২৩ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এর ৭৪তম জন্মবার্ষিকী যথাযথ উৎসাহ-উদ্দীপনা ও মর্যাদার সাথে পালন করেছে। এ উপলক্ষে দূতালয়ের বঙ্গবন্ধু কর্ণার ব্যানার ও পোস্টারের মাধ্যমে যথাযথভাবে সজ্জিত করা হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পন, বাণীপাঠ, আলোচনা সভা, প্রামাণ্য ভিডিওচিত্র প্রদর্শন ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিবসটি পালিত হয়। ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মোঃ আমিনুল ইসলাম খাঁন হাইকমিশনের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা পর্ব শুরু হয় এবং রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। আলোচনা পর্বে বক্তাগণ শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের অত্যন্ত কর্মময় জীবনের ওপর আলোকপাত করেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ক্রীড়া ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে তাঁর অবদানের কথা বিস্তারিত আলোচনা করেন।
ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মোঃ আমিনুল ইসলাম খাঁন শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বক্তব্যে বলেন, প্রাণবন্ত তরুণ যুবক বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের মাত্র ২৬ বছরের সংক্ষিপ্ত জীবন ছিল অসামান্য অর্জনে সমৃদ্ধ। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসের সূর্যসন্তান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত থাকবেন। তাঁর জীবন ও কর্মকাণ্ড বর্তমান প্রজন্মের তরুণদের অনুকরণীয়। স্বাধীন বাংলাদেশের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে শেখ কামালের অবদান চিরস্মরণীয়। শহীদ শেখ কামাল ছাত্রসমাজকে সংগঠিত করে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীর এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি বলেন, যুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশে যুব সমাজ যাতে পথভ্রষ্ট না হয় সে লক্ষ্যে শেখ কামাল ১৯৭২ সালে ‘আবাহনী ক্রীড়াচক্র’ ও আধুনিক সঙ্গীত সংগঠন “স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠী” প্রতিষ্ঠা করেন। ব্যক্তিগতভাবে তিনি একাধারে বাস্কেটবল, ক্রিকেট ও ভলিবল খেলতেন। শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল একজন সফল ক্রীড়া সংগঠকও ছিলেন। খেলোয়াড়দের স্বাবলম্বী করার জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি তিনি তাদের কল্যাণে ১০ লক্ষ টাকার একটি “খেলোয়াড় কল্যাণ তহবিল” গঠন করেন। শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল নিজে একজন গুনী সেতার বাদক ও নাটককর্মী ছিলেন। থিয়েটার নাট্যদল ‘ঢাকা থিয়েটার’ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তাঁর ছিল বিশেষ অবদান।
সবশেষে শেখ কামাল ছিলেন অত্যন্ত বিনয়ী, ভদ্র, নিরহংকারী, সদালাপী ও অফুরন্ত প্রাণশক্তির অধিকারী। স্বাধীনতা বিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের ধারক-বাহক নেতৃত্বকে নিশ্চিহ্ন করার হীন ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানব ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডে বঙ্গবন্ধু ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে তিনি শহীদ হন।
আলোচনার শেষে শহীদ শেখ কামাল ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মুনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।