কলম্বো, ১৫ আগস্ট ২০২৩:
শ্রীলংকায় বাংলাদেশ হাইকমিশন যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে আজ জাতীয় শোক দিবস এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদৎ বার্ষিকী পালন করেছে। সকালে হাইকমিশনার তারেক মো: আরিফুল ইসলাম জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে অর্ধনমিত করে এবং জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। অতঃপর জাতির পিতা ও ১৫ই আগস্ট শাহাদৎ বরণকারী তাঁর পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও অন্যান্যদের আত্মার মাগফেরাত এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ধারাবাহিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
সন্ধ্যায় শ্রীলংকার বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দ, বাংলাদেশ কমিউনিটির সম্মানিত সদস্যগণ এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা কর্মচারীগণের অংশগ্রহণে একটি স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়। সভার প্রারম্ভে জাতির পিতা ও ১৫ই আগস্ট শাহাদৎ বরণকারী তাঁর পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও অন্যান্যদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং তাঁদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। অতঃপর ১৫ই আগস্টের নৃশংস হত্যাকান্ডের উপর নির্মিত “বাঙ্গালির কালরাত" শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। দূতাবাসের কর্মকর্তারা দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন। অবশেষে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য প্রদান করেন শ্রীলংকায় WFP এর Country Director আব্দুর রহিম সিদ্দিকী, বাংলাদেশে নিযুক্ত শ্রীলংকার সাবেক রাষ্ট্রদূত প্রফেসর সুদর্শন সেনাভিরত্নে ও ক্রিসান্তি ডি সিলভা এবং হাইকমিশনের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা কমডোর মোঃ শফিউল বারী। আলোচকগণ রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ সহ বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অন্যান্য আন্দোলনে এবং স্বাধীনতা পরবর্তীকালে দেশ পরিচালনায় বঙ্গবন্ধুর বিচক্ষণ নেতৃত্বের উপর আলোকপাত করেন।
হাইকমিশনার তাঁর সমাপনী বক্তব্যে জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের শহিদ সদস্যবৃন্দের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে মুক্তিযুদ্ধের স্থপতি হিসাবে তাঁর অবিস্মরণীয় অবদানের কথা স্মরণ করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর বিশ্বদর্শনের সার্বজনীনতার কথা উল্লেখ করে একজন বিশ্বনেতা এবং মানবতা ও শান্তির দূত হিসাবে বঙ্গবন্ধুর বৈশ্বিক স্বীকৃতির উপর আলোকপাত করেন। জাতীয় শোক দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সবাইকে অবদান রাখতে আহবান জানান। সকলের স্ব স্ব দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা গেলে জাতির পিতার প্রতি সত্যিকারের সম্মান প্রদর্শন করা হবে মর্মে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
দিবসটি উপলক্ষ্যে হাইকমিশন কলম্বোর একটি মুসলিম এতিমখানায় জাতির পিতা ও তাঁর শাহাদৎ বরণকারী পরিবারের সদস্যবৃন্দের উদ্দেশ্যে পবিত্র কোরআন শরীফ খতম ও বিশেষ দোয়া মোনাজাতের আয়োজন করে এবং এতিমদের মাঝে উন্নত খাবার পরিবেশন করা হয়। এছাড়াও, তাঁদের স্মরণে মিশন শ্রীলংকায় দুঃস্থ স্কুলগামী শিশুদের মাঝে অনুশীলন বই বিতরণের একটি অনুষ্ঠান এবং ক্যান্সার আক্রান্তদের সহায়তার জন্য শ্রীলঙ্কা ক্যান্সার কেয়ার সোসাইটির সঙ্গে যৌথভাবে আরেকটি কমিউনিটি প্রোগ্রাম এ মাসেই আয়োজন করছে।