কাঠমান্ডু, ৭ মার্চ ২০২১:
কাঠমান্ডুস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস যথাযথ মর্যাদা ও শ্রদ্ধার সাথে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস উদযাপন করে । দূতাবাস এ উপলক্ষ্যে সকালে ও বিকেলে দুটি আলাদা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে । সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গনে রাষ্ট্রদূত সালাহউদ্দিন নোমান চৌধুরীর নেতৃত্বে পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসটির কর্মসূচীর সূচনা করা হয় । এরপর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবার ও দেশের জন্য আত্মত্যাগকারী সকল শহিদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের শান্তি, মঙ্গল ও উন্নয়নের জন্য বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া করা হয় । দূতাবাস এ উপলক্ষ্যে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে । সকালের এ আলোচনা সভায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ প্রদত্ত ঐতিহাসিক ভাষণ এর ভিডিওচিত্র এবং একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয় এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রেরিত বাণীসমূহ পাঠ করা হয়। অলোচনা অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ ছাড়াও নেপালে বসবাসকৃত বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
অপরাহ্ণে দূতাবাস ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ এর তাৎপর্যের উপর একটি ওয়েবিনারের আয়োজন করে । উক্ত ওয়েবিনারে বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত এবং নেপালের প্রাক্তন পররাষ্ট্র সচিব জনাব মধু রমন আচার্য, সার্কের প্রাক্তন মহাসচিব এবং নেপালের প্রাক্তন পররাষ্ট্র সচিব জনাব অর্জুন বাহাদুর থাপা এবং নেপাল কাউন্সিল অব ওয়ার্ল্ড এফেয়ার্স -এর সভাপতি জনাব হেমন্ত খারেল বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন । ওয়েবিনারের শুরুতেই বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চ-এর ঐতিহাসিক ভাষণ এর ভিডিওচিত্র এবং একটি প্রামান্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় । আলোচনার শুরুতে রাষ্ট্রদূতের স্বাগত বক্তব্যের পর আমন্ত্রিত অতিথিগণ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ-এর পটভূমি, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ও ঐন্দ্রজালিক ভাষণের অসীম গুরুত্ব ও তাৎপর্যের বিষয়ে তুলে ধরেন । তাঁরা বলেন বঙ্গবন্ধুর এই বিপ্লবী ভাষণ সমগ্র বাঙ্গালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল । বক্তাগণ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শত বার্ষিকী -“মুজিব শতবর্ষ”-এর স্মরণে বঙ্গবন্ধুর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন । বাংলাদেশ ও এর জনগনের জন্য বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের আত্মত্যাগ তাঁরা স্মরণ করেন । রাষ্ট্রদূত তাঁর সমাপনী বক্তব্যে বাংলাদেশের সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামে জাতির পিতার এই ভাষণের মাধ্যমে দিক নির্দেশনা, শক্তি ও সাহসের গুরত্ব তুলে ধরেন । তিনি বলেন ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্সের ময়দানে লাখো জনতার বিশাল জনসমুদ্রে বজ্রকন্ঠে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন তা ছিল প্রকৃতপক্ষে বাঙ্গালি জাতির মুক্তির সনদ, এই সম্মোহনী ভাষণ গোটা জাতিকে জাগিয়ে তুলেছিল । তিনি বলেন জাতির পিতার এই ভাষণ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুক্তিযোদ্ধাদের অমিত শক্তি ও সাহস যুগিয়েছিল । তিনি বলেন জাতির পিতার এই অত্যন্ত শক্তিশালী ঐতিহাসিক ভাষণ আজ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও স্বীকৃত, ইউনেস্কো এই ভাষণকে বিশ্ব প্রামান্য ঐতিহাসিক হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে মেমোরি অব ওয়ার্ল্ড রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করেছে যা পৃথিবীর বঞ্চিত ও মুক্তিকামী মানুষের প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
ওয়েবিনার অনুষ্ঠানে নেপালের শিক্ষা-গবেষণা সংশ্লিষ্ট চিন্তাবিদ, একাডেমিয়া, বাংলাদেশ থেকে অধ্যয়ন করে আসা প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীবৃন্দ যারা বর্তমানে বিভিন্ন বিশেষায়িত পেশায় নিযুক্ত, বিভিন্ন পেশাজীবীর ব্যক্তিবর্গ, সুশীল সমাজ, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিবর্গ, নেপালে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীগণ উপস্থিত ছিলেন ।