হ্যানয়, ভিয়েতনাম ০৯ আগস্ট ২০২৩ :
ভিয়েতনামের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাননীয় বুই থান সন (Bui Thanh Son)-এর সাথে আজ সকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মিজ সামিনা নাজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হ্যানয়-এ এক বিদায়ী সাক্ষাৎ করেন। বিদায়ী সভায় প্রথমেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশের মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বিগত ASEAN সভায় তাঁর সাক্ষাতের কথা স্মরণ করেন এবং রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে বাংলাদেশের মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তাঁর শুভেচ্ছা জানান। তিনি রাষ্ট্রদূত-কে হ্যানয়ে কর্মকালীন সময়ে দু-দেশের মধ্যে কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক, পিপল টু পিপল কানেকটিভিটি এবং সর্বোপরী দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়নে বিশেষ অবদানের জন্য প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশ দূতাবাস ও রাষ্ট্রদূতকে তার বিশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্রমন্ত্রী-কে ধন্যবাদ জানিয়ে উল্লেখ করেন যে, তার সূদীর্ঘ কর্মকালীন সময়ে তিনি ভিয়েতনাম ফরেন অফিস ও অন্যান্য সকল সরকারী অফিস এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংস্থাসমূহের যে ব্যাপক সহযোগীতা ও অনুপ্রেরণা পেয়েছেন তাতে করে তিনি দু-দেশের সর্বোপরি দ্বি-পাক্ষিক বিষয়সমূহের উন্নয়ন ও বিকাশে একনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পেরেছেন। রাষ্ট্রদূত মন্ত্রীকে জানান যে, ২০১৭ তে ভিয়েতনামে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব নেওয়া কালীন সময়ে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে বিশেষভাবে নির্দেশ দেন যেন তিনি বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যেকার বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক-কে বেগবান করেন। বিগত বছরগুলোতে দু-দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের ব্যাপক উন্নয়নে দূতাবাস ও রাষ্ট্রদূত যে নিরলস কাজ করেছেন (২০১৭ তে দু-দেশের বাণিজ্যের পরিমান ছিল ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যা ২০২২-এ এসে ১.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এর উর্ধ্বে উন্নীত হয়েছে) তা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এজন্য রাষ্ট্রদূত-কে বিশেষ ধন্যবাদ দেন এবং আশা করেন যে, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম ভবিষ্যতে আরও অধিক সহযোগীতার মাধ্যমে দু-দেশের দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক-কে এক উচ্চতর স্তরে নিয়ে যাবে।
রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানান যে শীঘ্রই দু-দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ শুরু হবে যে লক্ষ্যে তিনি কাজ করছেন যা দু-দেশের বাণিজ্য, কুটনীতি, পিপল টু পিপল সংযোগ, বৌদ্ধ রেলিক সাইটে পর্যটন উন্নয়ন, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কোন্নয়নে এক নূতন দিগন্তের সূচনা করবে। রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ভিয়েতনামিজ বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেন।
মাননীয় মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে, আঞ্চলিক-আন্তর্জাতিক ফোরামে বিশেষ করে জাতিসংঘে উভয় দেশ পরস্পরকে সহযোগীতা ও সমর্থন করে যাবে। এ বিষয়ে রাষ্ট্রদূত একাত্নতা জানিয়ে ভিয়েনামকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেন বাংলাদেশকে আসিয়ান (ASEAN)-এর সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হিসেবে অন্তর্ভূক্তির লক্ষ্যে কাজ করার জন্য। আরো উল্লেখ করেন যে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে ভিয়েতনাম এক আঞ্চলিক লিডার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
সবশেষে মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ-কে তাঁর পররবর্তী কর্মস্থল কায়রো-তে যোগদানের লক্ষ্যে উষ্ণ শুভেচ্ছা এবং ভিয়েতনামে সাফল্যজনকভাবে তার দীর্ঘ কর্মকালীন সময়ে অবদানের জন্য পূণরায় ধন্যবাদ জানান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতকে তার ভিয়েতনামে কর্মরত অবস্থায় পিতৃ ও স্বামী বিয়োগে গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।
সভাশেষে রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশ-ভিয়েতনামের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনের একটি সুভ্যিনির উপহার দেন।