সিট্যুয়ে, ১৫ আগস্ট ২০২২

বাংলাদেশ কনস্যুলেট সিট্যুয়ে, আজ যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর্যের সাথে স্বাধীনতার মহান স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৭তম শাহাদত বার্ষিকী ও ‘জাতীয় শোক দিবস’ পালন করে।

এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে মিশন প্রধান জনাব জাকির আহমেদ ও কনস্যুলেটের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতিতে অর্ধনমিত পতাকার সাথে জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। এরপর মিশন প্রধান জনাব জাকির আহমেদ গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ  ও কনস্যুলেটের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দদের নিয়ে  জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। আগত অতিথিবৃন্দ এবং কনস্যুলেটের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ জাতির পিতা, তাঁর পরিবারের অন্যান্য শহিদ সদস্য ও শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে ০১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর মিশনের কর্মকর্তাগণ জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে প্রেরিত মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণীসমূহ পাঠ করেন। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কালজয়ী নেতৃত্ব ও অবিস্মরণীয় কর্মকান্ডের  উপর নির্মিত চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধু (Forever Bangabandhu) শীর্ষক একটি প্রামান্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয়।

শোক দিবসের এই অনুষ্ঠানে, ভারতীয় কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল শ্রী বিবেকানন্দ ভট্টামিশ্র, এবং জাতিসংঘের রেসিডেন্ট কোওর্ডিনেটর জনাব রিকার্ডো মায়া বক্তব্য রাখেন। ভারতীয় কনসাল জেনারেল তার বক্তব্যে বলেন বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের নেতা নন তিনি বিশ্ব নেতা। জাতিসংঘের রেসিডেন্ট কোওর্ডিনেটর বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামকে অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে এক সংগ্রামের এক বিস্ময়কর উপাখ্যান বলে উল্লেখ করেন। মিশন প্রধান তাঁর বক্তব্যের শুরুতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি ১৫ আগস্টের এই দিনটিকে ইতিহাসের সবচাইতে জঘন্যতম ও কলঙ্কজনক দিন হিসেবে উল্লেখ করেন। এ সময় তিনি বলেন যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু একটি সুখী, সমৃদ্ধ, শোষণমুক্ত ও বৈষম্যহীন ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলেও তাঁর আদর্শ ও স্বপ্নকে ঘাতকরা কখনই হত্যা করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা  বাস্তবায়নে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ অদম্যগতিতে উন্নয়নের শিখরে আরোহণের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। তিনি আরও বলেন বিগত ১০ বছরে বাংলাদেশ শিক্ষা, স্বাস্থ, কৃষি, তথ্য প্রযুক্তি, যোগাযোগ, অবকাঠামো উন্নয়ন, কূটনীতি, গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নসহ, প্রায় সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভাবনীয় উন্নতি ও সাফল্য লাভ করেছে। মিশন প্রধান আজকের এই শোক দিবসের শোককে শক্তিতে রুপান্তর করে সকলকে যার যার অবস্থান থেকে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে উন্নত দেশ গড়ার প্রক্রিয়ায় অবদান রাখার আহবান জানান।

রাখাইনে চলমান গৃহযুদ্ধের মধ্যেও মিশন কর্তৃক আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ভারতীয় কন্স্যুলেটের কূটনীতিকবৃন্দ, জাতিসংঘের কর্মকর্তাবৃন্দ (UNRC, UNHCR, WFP), সাংবাদিক, আইনজীবী, বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতা, রাখাইন স্টেট চেম্বার অব কমার্স-এর সভাপতিসহ রাখাইনের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতি তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

অনুষ্ঠানে শেষে মিশনের কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর পরিবারের অন্যান্য শহিদ সদস্য ও শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত সুখ সমৃদ্ধির কামনায় এক মিলাদ মাহফিলের ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়।