বুধবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৩, স্টকহোমঃ
’শেখ রাসেল দীপ্তিময়, নির্ভীক নির্মল দুর্জয়’ প্রতিপাদ্যের আলোকে স্টকহোমস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় শেখ রাসেল দিবস-২০২৩ উদযাপিত হয়েছে । দূতাবাস কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে ছিল শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষ্যে বিশেষ সেমিনার, শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে চিত্রাঙ্কন ও ছড়া/কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন এবং শেখ রাসেলের উপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন। এ অনুষ্ঠানে দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারিবৃন্দ, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গগণ, প্রবাসী বাংলাদেশীবৃন্দ ও শিশু-কিশোররা অংশগ্রহণ করেন।
পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ থেকে পাঠের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের প্রথমভাগে শুরু হয় । এরপর রাষ্ট্রদূত জনাব মেহ্দী হাসান-এর নেতৃত্বে উপস্থিত সুধীবৃন্দ শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর শেখ রাসেল দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয় ।
এরপর শেখ রাসেল দিবস-এর বিশেষ সেমিনার-এ স্টকহোমস্থ শিশু-কিশোররা, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গগণ শেখ রাসেল দিবস এর মাহাত্ম্য তুলে ধরেন। সেমিনার-এ প্রধান বক্তা ছিলেন সুইডিশ নাগরিক বিচারপতি সৈয়দ আসিফ শাহকার। তিনি পূর্বে পাকিস্তানের নাগরিক ছিলেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের প্রতি অকুন্ঠ সমর্থন দেন, যার জন্য তাকে পাকিস্তান ত্যাগ করতে হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তাকে friends of bangladesh সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। সম্প্রতি, তার আবেদনের প্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করেন।
সেমিনার-এ বক্তারা বলেন, শৈশব থেকে দূরন্ত প্রাণবন্ত সকলের আদরের ছোট শিশু শেখ রাসেল ছিল অত্যন্ত বিনয়ী ও পরোপকারী। শিশু শেখ রাসেলকে তার পরিবারসহ হত্যা- ইতিহাসের ঘৃণিততম অধ্যায় ও মানবাধিকারের চরম অবমাননা। রাষ্ট্রদূত মেহ্দী হাসান তার বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শিশু রাসেলসহ ১৫ আগস্টে শাহাদত বরণকারী সকলের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ও তাঁদের রূহের মাগফেরাত কামনা করেন । তিনি বলেন, শিশু শেখ রাসেলের যে চারিত্রিক বৈশিষ্টের রূপ পাওয়া যায়, তা আজকের শিশু-কিশোর-এর জন্য আদর্শ ও অনুকরণীয়। রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের কালরাতে ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকারদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে কোমলমতি শিশু রাসেলকেও নির্মমভাবে হত্যা করে, কিন্তু তারা সফল হয়নি। শেখ রাসেল আজ বিশ্বে অধিকার বঞ্চিত শিশুদের প্রতীক ও মানবিকসত্ত্বা হিসেবে সবার মাঝে বেঁচে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয়ভাগে শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে চিত্রাঙ্কন ও ছড়া/কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় । অনুর্ধ্ব ১২ বছর বয়সী শিশু এবং ১২+-১৮ বছর বয়সী শিশু-কিশোররা দুটি বিভাগে এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। এরপর শেখ রাসেলের উপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্রসমূহ প্রদর্শন করা হয়। এরপর মান্যবর রাষ্ট্রদূত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, ছড়া/কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীদের সকলকে এবং বিজয়ীদেরকে পুরস্কার প্রদান করেন । পরিশেষে শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষ্যে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।