হ্যানয়, ভিয়েতনাম ২৬ মার্চ ২০২৩:

গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতার ৫২ তম বছর বাংলাদেশ দূতাবাস হ্যানয়, ভিয়েতনামে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আজ উদযাপন করা হয়। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে মান্যবর রাষ্ট্রদূত কর্তৃক জাতীয় পতাকা উত্তোলন, মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ এবং বিশেষ প্রার্থনা, আলোচনাসভা এবং ডকুমেন্টারী প্রদর্শন-এর আয়োজন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে ভিয়েতনামিজ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, প্রবাসী বাংলাদেশীগন, ভিয়েতনামের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, মিডিয়া এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তাদের পরিবারবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৩ পালনের প্রথম পর্যায়ে দূতাবাসে প্রত্যুষে ভিয়েতনামে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মিজ সামিনা নাজ জাতীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলনের মাধ্যমে জাতীয় দিবসের সূচনা করেন।

পরে দূতাবাসে এক বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করে স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি ও অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যগন, মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও আহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, নির্যাতিতা মা-বোন, জাতীয় চার নেতার রুহের মাগফেরাত এবং দেশের সমৃদ্ধি কামনা করা হয়। এরপর মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর এ দিবস উপলক্ষ্যে প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৩ এর আলোচনার প্রারম্ভে অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রদূত মিজ সামিনা নাজ বক্তব্য প্রদান করেন। বক্তব্যের শুরুতে বাংলাদেশের ইতিহাসে মহান স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য এবং বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নের্তৃত্বের কথা  তিনি সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন। তিনি বলেন যে, বঙ্গবন্ধুুর নেতৃত্বে ও অপরিসীম ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ স্বাধীন দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারছি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা মুক্ত, সুখী, সমৃদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে যাচ্ছি। রাষ্ট্রদূত কৃতজ্ঞচিত্তে আরো স্মরণ করেন জাতীয় চার নেতা সহ মুক্তিযুদ্ধের  সংগঠক-সমর্থক, মুক্তিযুদ্ধে অত্মোৎসর্গকারী বীর শহিদদের যাঁদের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা, যারা দেশ মাতৃকার জন্য জীবন এবং নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন তাঁদের আত্মত্যাগের কথা। আরও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ভারতসহ বিদেশী বন্ধুদের প্রতি যাঁরা আমাদের বিজয় অর্জনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অবদান রেখেছেন।

বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথ ধরে, তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের গত চৌদ্দ বছরের অভূতপূর্ব সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রগতি এবং একটি  মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার কথা তিনি উল্লেখ করেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ছাড়াও দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক সমস্যা মোকাবিলা, শিশু মৃত্যুর হার কমানোসহ নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং অগ্রগতি বিষয়ক একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।  অনুষ্ঠান শেষে আমন্ত্রিত অতিথিদেরকে বাংলাদেশী রসনা স্বাদে ইফতার ও সান্ধ্যভোজে  আপ্যায়িত করা হয়।

উল্লেখ্য যে, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৩ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রদূতের লিখিত একটি নিবন্ধ ২৬ মার্চ ২০২৩ তারিখের ভিয়েতনামের জাতীয় দৈনিকে Vietnam News-এ প্রকাশ করা হয়। যাহার লিংক- - https://vietnamnews.vn/opinion/op-ed/1502085/bangladesh-celebrates-52nd-independence-and-national-day.html

বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, পবিত্র রমজান মাসে স্বাধীনতা দিবস হওয়ায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন-এ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বাংলাদেশ দূতাবাস, হ্যানয়, ভিয়েতনাম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৩ এর অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান পবিত্র রমজান এবং ঈদ পরবর্তী সময়ে জমকালোভাবে উদযাপন করা হবে।