করাচি, ১৮ ডিসেম্বর ২০২২ঃ
বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন, করাচি “আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০২২” পালন করে। মিশনের সম্মেলন কক্ষে দিবসের উপর আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। উল্লেখ্য দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিলঃ “থাকব ভালো, রাখব ভালো দেশ-বৈধ পথে প্রবাসী আয়, গড়ব বাংলাদেশ” । আয়োজিত আলোচনা সভায় মিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ এবং ব্যবসায়ী, প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। দিবসের প্রতিপাদ্য তথা আন্তর্জাতিক অভিবাসন, বাংলাদেশী অভিবাসীদের ভূমিকা, বাংলাদেশ থেকে অভিবাসনের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ, এবং অভিবাসন সম্পর্কিত বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপসমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
উপ-হাইকমিশনার এস.এম. মাহবুবুল আলম তাঁর বক্তব্যে বলেন যে, ১৬ কোটি মানুষের দেশের প্রায় দেড় কোটি লোক অভিবাসী হিসাবে বিশ্বের ১৮০টির বেশী দেশে বসবাস করেন। তিনি তাদের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতাভরে উল্লেখ করেন এবং উপস্থিত সকলকে “আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০২২” উদযাপনের প্রাক্কালে অভিনন্দন জানান। তিনি উল্লেখ করেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা স্বাগতিক দেশ ও বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অতিব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। তিনি উল্লেখ করেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা অভিবাসী হিসাবে সংখ্যার ভিত্তিতে পৃথিবীতে ৬ষ্ঠ এবং রেমিট্যান্স প্রেরণের ক্ষেত্রে পৃথিবীতে ৭ম এবং এশিয়াতে ৩য়। তিনি নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও বৈধ অভিবাসনের উপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন যে, Safe, Orderly and Regular Migration এর জন্য Global Compact for Migration (GCM) এ বাংলাদেশ একটি “Champion Country”। ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসন নিরসনকল্পে জনসচেতনা বৃদ্ধির উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে তিনি উল্লেখ করেন যে, ২০২০ সালে সারা পৃথিবীতে ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসনের কারণে প্রায় ৩,০০০ লোকের দূর্ভাগ্যজনক ও মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে।
উপ-হাইকমিশনার উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ সরকার সময়োপযোগী, বাস্তবধর্মী ও গতিশীল নীতি, পদক্ষেপ ও ব্যবস্থাপনার জন্য দেশের জনগণ আজ জনসম্পদে রূপান্তরিত হচ্ছে। তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ সরকার নিরাপদ ও নৈতিক অভিবাসন নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারাবব্ধ । বাংলাদেশ সরকার প্রতিটি উপজেলায় থেকে বছরে গড়ে এক হাজার কর্মীকে বিদেশে পাঠানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। প্রতিযোগিতামূলক আন্তর্জাতিক বাজারে টিকে থাকার জন্য দক্ষ জনশক্তির কোন বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন যে, প্রশিক্ষণ পেলে বাংলাদেশের অভিবাসীরা দেশের অর্থনীতিতে আরও বেশী অবদান রাখতে পারবেন। বাংলাদেশ সরকার ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় উপজেলা পর্যায়ে একটি করে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ কর্মী/জনশক্তি তৈরীর লক্ষ্য নিয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন যে, অভিবাসী বাংলাদেশীদের সার্বিক কল্যাণার্থে বাংলাদেশ সরকার বহুবিধ কর্মসূচী ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
“আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০২২” পালনের প্রাক্কালে বৈধভাবে দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণের উপর গুরুত্ব আরোপ করে উপ-হাইকমিশনার বলেন যে, অভিবাসী বাংলাদেশীরা তাদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশে প্রেরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তথা দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন প্রভূত অবদান রাখছেন এবং তাদের নিষ্ঠা, মেধা, সততা ও কঠোর পরি্শ্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের সুনাম বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে দিচ্ছেন।