আঙ্কারা, ১৫ আগস্ট ২০২২ঃ
যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে তুরস্কে ১৫ আগস্ট ২০২২ তারিখে জাতীয় শোক দিবস এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান -এর ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী পালন করা হয়। ১৫ আগস্ট ২০২২ সকালে রাষ্ট্রদূত মস্য়ূদ মান্নান, এনডিসি কর্তৃক দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে দিবসটি পালনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এ সময়ে সকলেই দিবসটি স্মরণে কালো ব্যাজ পরিধান করেন এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ এবং তাঁদের পরিবারবর্গের উপস্থিতিতে রাষ্ট্রদূত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান -এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ। দূতাবাসের বিজয় একাত্তর মিলনায়তনে দিবসটি উপলক্ষ্যে মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী’র বাণী পাঠ করা হয়। অতঃপর বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপরে নির্মিত একটি প্রামান্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
বিকেলের অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৫ আগষ্ট -এর বিয়োগান্ত ঘটনায় যারা শহীদ হয়েছেন তাদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপরে ছিল - সেমিনার ”বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাশাঃ ৫১ বছরে বাংলাদেশ”। সেমিনারে মূল বক্তা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তজার্তিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ। তাছাড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডীন ড. মাসুম বিল্লাহ, তুরস্কের বাসক্যান্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হালুক কারাদা এবং ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি ইন্সটিটিউটের ম্যাক্স ওয়েবার পোষ্ট ডক্টরেট ফেলো ড. মোরশেদ মান্নান, বার-এট-ল বক্তব্য প্রদান করেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব মসয়ুদ মান্নান, এনডিসি। পরে শেখ রাসেল শিশু কর্ণারের সদস্যদের অংশগ্রহনে ছড়া ও কবিতা পাঠের অনুষ্ঠান এবং অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে উপহার বিতরণ করা হয়। এরপরে ”মুজিব আমার পিতা” নামে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে ১৫ আগস্টের বিয়োগান্তু ঘটনার প্রতি আলোকপাত করতে গিয়ে বলেন, বাঙ্গালী জাতির কল্যাণে ও তাদের অধিকার নিশ্চিতকল্পে বঙ্গবন্ধু আমৃত্যু নিরলস পরিশ্রম করে গেছেন এবং সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। এছাড়া, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক বিশ্বাস এবং দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়ে তিনি উল্লেখ করেন যে, বঙ্গবন্ধু বাঙ্গালী জাতিকে পরাধীনতার গ্লানি থেকে মুক্ত করে শুধু বাংলাদেশের স্বাধীনতাই এনে দেননি বরং স্বপ্নের “সোনার বাংলা” বিনির্মাণে এবং বাঙ্গালী জাতির মূল্যবোধ, আদর্শ ও লক্ষ্য প্রতিষ্ঠার জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের “সোনার বাংলা” গড়ার লক্ষ্যে প্রত্যেক বাংলাদেশীকে যার যার অবস্থানে থেকে কাজ করার জন্য আহ্বান জানান। তিনি বলেন যে, বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকারীরা বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের চেতনাকে বাংলাদেশের আপামর জনতার মন থেকে যেমন মুছে ফেলতে পারেনি তেমনিভাবে আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতিকেও স্থায়ীভাবে বাধাগ্রস্থ করতে পারেনি। ফলশ্রুতিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ আজ একটি সম্মানজনক অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়চেতা নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল বিশ্বের দেশগুলোর জন্য রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। আজ দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহের মধ্যে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় সর্বোচ্চ এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ বর্তমান সরকারের সময় সম্ভব হয়েছে।
পরিশেষে, উপস্থিত সকলকে আপ্যায়নের মাধ্যমে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।