মাদ্রিদ, ২৩ মে ২০২৩ ঃ
মাদ্রিদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস আজ ২৩ মে ২০২৩ তারিখে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্যাপন উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। দুপুর ১১:৩০ ঘটিকায় দূতাবাসের সভাকক্ষে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা সভা শুরু হয়। বাঙালি জাতিরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা ও স্বাধীনতার স্থপতি, গণতন্ত্র ও শান্তি আন্দোলনের পুরোধা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৩ সালের ২৩ মে বিশ্ব শান্তি পরিষদ কর্তৃক জুলিও কুরি শান্তি পদকে ভুষিত করা হয়। বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী ম্যারী কুরি ও পিয়েরে কুরি দম্পত্তি বিশ্ব শান্তি সংগ্রামে যে অবদান রেখেছেন, তা চিরস্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্যে বিশ্ব শান্তি পরিষদ ১৯৫০ সাল থেকে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদানের জন্য বরণীয় ব্যক্তি ও সংগঠনকে জুলিও কুরি শান্তি পদকে ভূষিত করে আসছে। নেলসন ম্যান্ডেলা, ফিদেল ক্যাস্ট্রো, হো চি মিন, ইয়াসির আরাফাত, সালভেদর আলেন্দে, ইন্দিরা গান্ধী, মাদার তেরেসা, কবি ও রাজনীতিবিদ পাবলো নেরুদা, জওহরলাল নেহেরু, মার্টিন লুথার কিং, লিওনিদ ব্রেজনেভ প্রমুখ বিশ্বনেতাদের এই পদকে ভূষিত করা হয়।
রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশ্বনেতাদের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর অবদান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নেতৃত্বে, দীর্ঘ নয় মাস মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ছিল পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ, বঞ্চনা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে বিজয়। ফ্যাসিবাদবিরোধী, সাম্রারাজ্যবাদবিরোধী ও শোষণের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামকে বিশ্ব মানবতার ইতিহাসে চির অম্লান করে রাখার জন্য বিশ্ব শান্তি পরিষদ ১৯৭৩ সালের ২৩ মে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রদান করে। এ সম্মান পাবার পর বঙ্গবন্ধু তাঁর বক্তৃতায় বলেছিলেন, “এ সম্মান কোন ব্যক্তি বিশেষের জন্য নয়। এ সম্মান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মদানকারী শহীদদের, স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর সেনানীদের। জুলিও কুরি শান্তি পদক সমগ্র বাঙালী জাতির।” বঙ্গবন্ধুকে পদক পরিয়ে দেয়ার সময় বিশ্ব শান্তি পরিষদ এর মহাসচিব ঘোষণা করলেন, “শেখ মুজিব শুধু বঙ্গবন্ধু নন, আজ থেকে তিনি বিশ্ববন্ধুও বটে।” শান্তির দূত বঙ্গবন্ধু “সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়” এবং সকল বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানকে তার পররাষ্ট্রনীতির মূলমন্ত্র হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর উদ্ধৃতি “রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্থহীন হয়ে যাবে, যদি অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জিত না হয়”-কে স্মরণ করে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে স্ব-স্ব অবস্থান থেকে কাজ করার জন্য প্রবাসীদের আহবান জানান।
আলোচনা সভায় দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী, সাংবাদিক প্রতিনিধি ও স্পেন প্রবাসী বাংলাদেশী বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভা শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মহান মুক্তিযুদ্ধে সকল শহিদের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নতি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত অতিথিবৃন্দকে চা-চক্রে আপ্যায়ন করা হয়।