হ্যানয়, ভিয়েতনাম ২৫ মার্চ ২০২৩:
২৫ মার্চ ২০২৩ “গণহত্যা দিবস” বাংলাদেশ দূতাবাস হ্যানয়, ভিয়েতনামে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও ভাব গম্ভীর পরিবেশে পালন করা হয়। দিনটি স্মরণ করে বিশেষ প্রার্থনা, এক মিনিট নীরবতা পালন করে শোক প্রকাশ, মহামান্য রাষ্ট্রপতির বাণী, মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর বাণী ও বিশেষ আলোচনা সভা ও একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
আলোচনার প্রারম্ভে মান্যবর রাষ্ট্রদূত শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যার নেতৃত্ব ও দিক নির্দেশনায় ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত সকল সংগ্রাম এবং দীর্ঘ ন’মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় আমাদের মহান স্বাধীনতা। তিনি আরো স্মরণ করেন ২৫ মার্চ কালরাতের নৃশংস হত্যাকান্ডসহ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নির্মম গণহত্যার শিকার সকল শহীদকে, জাতীয় চার নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক-সমর্থকসহ দেশের জনগনকে, যাঁদের অসামান্য অবদান আত্নত্যাগের বিনিময়ে আমরা অর্জন করেছি স্বাধীনতা।
আলোচনা সভায় মান্যবর রাষ্ট্রদূত মিজ সামিনা নাজ তাঁর বক্তব্যে ২৫ মার্চ গণহত্যায় হানাদার বাহিনীর নৃশংসতার চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী এবং তাদের দোসরদের দ্বারা ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ কালরাতে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যা বিশ্বের নৃশংস ও নারকীয় গণহত্যাগুলোর অন্যতম। পরবর্তী নয় মাস বাংলাদেশে স্বাধীনতা চলাকালীন সময়ে পাকিস্তানী বাহিনী এবং তাদের এ দেশীয় দোসররা সারা দেশে নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ চালায়। হত্যা করা হয় ৩০ লক্ষ মানুষকে - সম্ভ্রম হানি করা হয় ২ লক্ষ মা বোনের। লক্ষ লক্ষ বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়। বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত করা হয় প্রায় এক কোটি মানুষকে।
মান্যবর রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে জানান যে, কালোরাত্রি ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসেবে জাতিসংঘের মাধ্যমে আর্ন্তজাতিক স্বীকৃতি লাভের জন্য বাংলাদেশ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। সকল বাধা পেরিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে বাংলাদেশ আজ এগিয়ে চলেছে উন্নতি আর সমৃদ্ধির পথে। বাংলাদেশকে ২০৪১ সালে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নে সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখার জন্য মান্যবর রাষ্ট্রদূত আহবান জানান।
আলোচনা অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কর্মকর্ত/কর্মচারীগণ এবং ভিয়েতনামী গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন এবং সর্বশেষে গণহত্যার উপর একটি বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শেষে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে গণহত্যার শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।