১৫ আগস্ট, ২০২০, বুখারেস্ট:
পুনঃপ্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ দূতাবাস, বুখারেস্ট প্রথমবারের মত যথাযোগ্য মর্যাদায় আজ জাতীয় শোকদিবস পালন করে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত কর্মসূচির মধ্যে ছিল সকালে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করণ। বিকালের কর্মসূচিতে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন, এক মিনিট নিরবতা পালন, বানী পাঠ, প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন, আলোচনাসভা এবং ১৫ আগষ্ট ১৯৭৫ এ বঙ্গবন্ধুসহ সকল শাহাদত বরণকারিদের আত্মার মাগফেরাত ও দেশের উন্নয় ও মঙ্গল কামনা করে বিশেষ মোনাজাত।
অনুষ্ঠানের শুরুতে এক মিনিট নিরবতা পালন শেষে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ দূতাবাস, বুখারেস্টে-এ নব নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত জনাব মোঃ দাউদ আলী দূতাবাসের কর্মকর্তা, পরিবারবর্গ, প্রবাসী বাংলাদেশি ও অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিদেশিদের নিয়ে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। অতঃপর রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের কর্মকর্তা কর্তৃক এ শোকদিবস উপলক্ষে প্রদেয় মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণীসমূহ পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রবাসী বাঙ্গালীগণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এবং তাঁর সংগ্রামী রাজনৈতিক জীবনের উল্লেখযোগ্য দিকসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে এ দিনের ঘটনা পরম্পরা এবং বাঙ্গালী জাতির জীবনে এ বিয়োগান্তক ঘটনার সুদূর প্রসারী নেতিবাচক প্রভাবের দিক তুলে ধরে বলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনঃগঠনে প্রয়োজনীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহন করেন এবং সে অনুযায়ী কাজ শুরু করেন। কিন্তু কতিপয় কুচক্রীদের দ্বারা বঙ্গবন্ধুকে ১৯৭৫ সালের এ দিনে হত্যার ফলে দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ড মুখ থুবড়ে পরে। তবে দীর্ঘদিন পরে হলেও সেসকল খুনিদের বিচার করা সম্ভব হয়েছে। কয়েকজনকে ফাঁসির মধ্য দিয়ে বিচারের রায় কার্যকর করা হয়েছে। তবে এখনো যারা বিভিন্ন দেশে পলাতক রয়েছে তাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে বিচারের রায় কার্যকর করার জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরো বলেন, তাঁর সমগ্র সত্তা জুড়ে ছিল বাংলা ও বাংলাদেশ। তাঁর নির্মম হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন মুখ থুবড়ে পড়লেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর জীবনের সব চেয়ে বড় এই শোককে শক্তিতে পরিণত করে দেশকে উন্নয়নের অনন্য মাত্রায় অধিষ্ঠিত করেছেন। রাষ্ট্রদূত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানের শেষার্ধে বঙ্গবন্ধু, তাঁর সহধর্মিনি ও পরিবারের সকল সদস্য সহ ১৫ই আগস্টে শাহাদতবরণকারী সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশ ও জাতির শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
নব নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ৬ আগষ্ট ২০২০ হতে তাঁর কার্যক্রম শুরু করেছেন। উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে বুখারেস্টে দূতাবাস স্থাপন করলেও ১৯৯৫ সালে তা বন্দ করে দেয়া হয়। রোমানিয়া সরকারও তাদের ঢাকাস্থ দূতাবাস ২০০০ সালে বন্দ করে দেয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তে জুলাই ২০২০ হতে বাংলাদেশ বুখারেস্টে দূতাবাস পুঃস্থাপনের মাধ্যমে তাঁর যাত্রা শুরু করল।