১৫ মার্চ ২০২১, দোহা, কাতার:
কাতারের রাজধানী দোহায় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ বক্তৃতার আরবি অনুবাদ সম্বলিত একটি পুস্তিকা উম্মোচন করা হয়। ৭ই মার্চ উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে গত ১০ মার্চ তারিখে দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য বিষয়ক ওয়েবিনারে ভার্চুয়ালি এই পুস্তিকার উন্মোচন করা হয়। পুস্তিকাটির উন্মোচন করে কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জসীমউদ্দিন বলেন যে, আরবি ভাষায় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ বক্তৃতার অনুবাদ প্রকাশিত হওয়ার ফলে কাতারের নীতিনির্ধারণী মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে এই ঐতিহাসিক বক্তৃতা পৌঁছে দেয়া সম্ভবপর হবে। তিনি বলেন ৭ই মার্চের বক্তৃতা বাঙালির জাতীয় সম্পদ থেকে আজ এক আন্তর্জাতিক সম্পদ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে এবং আরবি ভাষায় বক্তৃতার অনুবাদের মধ্য দিয়ে এই ভাষণ সম্পর্কে কাতারের জনসাধারণ জানতে পারবে। আরবি ভাষার পাশাপাশি এই পুস্তিকায় ইংরেজি অনুবাদ ও ভাষণটির মূল বাংলা সন্নিবেশিত হয়েছে। রাষ্ট্রদূত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক অবদানের কথা উল্লেখ করে বাঙালির স্বাধীকার অর্জন এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্যে এদেশের জনগণের স্বপ্ন বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম এবং সেই সাথে কাতারের স্থানীয় জনগণের কাছে তুলে ধরার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি আরো বলেন যে ৭ই মার্চের বক্তৃতার অন্তর্নিহিত দর্শন ছিল সব ধরনের অন্যায়ের অবসান। সেই দর্শনের উপর ভিত্তি করে বঙ্গবন্ধু বাঙালি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির লক্ষ্যে নিজেকে উৎসর্গ করেন। রাষ্ট্রদূত জসীম উদ্দিন জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের বছরে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি জাতির পিতা, জাতীয় চার নেতা, ত্রিশ লক্ষ শহীদ ও দুই লক্ষ মা-বোনের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
ওয়েবিনারে আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক বক্তৃতার তাৎপর্য ও গুরুত্ব তুলে ধরেন। বক্তারা ৭ই মার্চের বক্তৃতাকে বাঙালির মুক্তির সনদ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন এই বক্তৃতা পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তের নির্যাতিত মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করবে। বক্তারা বঙ্গবন্ধুকে একজন মহান চিন্তাবিদ, রাজনীতির কবি এবং দার্শনিক হিসেবে আখ্যায়িত করেন। দু'পর্বে বিভক্ত ওয়েবিনারের প্রথম অংশে অংশ নেন প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত মোঃ আব্দুল হান্নান, কাতার প্রবাসী বিশিষ্ট ঐতিহাসিক ডক্টর হাবিবুর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর দেলোয়ার হোসেন। ওয়েবিনারের দ্বিতীয় পর্বে প্রবাসী বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন। দূতাবাসের কাউন্সেলর মাহবুর রহমানের সঞ্চালনায় আয়োজিত এই ওয়েবিনারে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী অংশ নেন।