হ্যানয়, ভিয়েতনাম ০৮ই মার্চ ২০২৩:
০৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে ভিয়েতনামের মাননীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট ম্যাডাম ভু থি আন জুয়ান ভিয়েতনামে নিযুক্ত সকল নারী রাষ্ট্রদূত এবং হ্যানয়স্থ আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের নারী প্রধানদের অংশগ্রহণে একটি চা-চক্রের আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানে ভিয়েতনামে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মিজ সামিনা নাজ ভিয়েতনামের কূটনৈতিক কোড় এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে বিশেষ স্পিকার হিসাবে আমন্ত্রিত হয়ে অংশগ্রহণ করেন।
উক্ত চা-চক্রে ভিয়েতনামের মাননীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট ম্যাডাম ভু থি আন জুয়ান, ভিয়েতনাম ন্যাশনাল এসেম্বলির সোস্যাল অ্যাফেয়ার্স সম্পর্কিত স্ট্যান্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান ম্যাডাম ন্যুয়েন থুই আন, ভিয়েতনাম উইমেনস ইউনিয়ন-এর কো-চেয়ারম্যান ম্যাডাম হা থি ন্যা, ভিয়েতনাম কম্যুনিস্ট পার্টির সেন্ট্রাল কমিটির এক্সটার্নাল রিলেশনস কমিশনের ভাইস কো-চেয়ারম্যান ম্যাডাম ন্যুয়েন থি হোয়াং ভান, ভিয়েতনামের কালচার, স্পোর্টস এবং ট্যুরিজম মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি মিনিস্টার ম্যাডাম চিং থি থুই, সাবেক ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ভিয়েতনামের ইউনিয়ন অফ ফ্রেন্ডশীপ অর্গানাইজেশন-এর প্রেসিডেন্ট ম্যাডাম ন্যুয়েন ফুং ন্যা, ভিয়েতনাম পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাডাম ন্যুয়েন মিন হাং সহ উর্ধ্বতন কর্মকতা এবং ভিয়েতনামে নিযুক্ত সকল নারী রাষ্ট্রদূত এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের নারী প্রধানগন উপস্থিত ছিলেন।
ভিয়েতনামের হ্যানয়স্থ চারুকলা মিউজিয়ামে অনুষ্ঠানটির আয়েজন করা হয়। অনুষ্ঠানে মাননীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট ভিয়েতনামের চা সংস্কৃতি এবং বার্ণিশ পেইন্টিং শিল্পের সাথে বিশিষ্ট অতিথিদের পরিচয় করে দেন।
অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে মাননীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট ম্যাডাম ভু থি আন জুয়ান আগত সকল অতিথিদের অর্ভ্যথনা এবং শুভকামনা জানান। তিনি সাধারণভাবে বিশ্বে তথা ভিয়েতনামে শান্তি ও উন্নয়নে অবদানের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। ভিয়েতনামের সকল নারী রাষ্ট্রদূতগণ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার নারী প্রধানগণ এই অঞ্চল ও বিশ্বে শান্তি, সহযোগীতা এবং উন্নয়নের জন্য ভিয়েতনামের সাথে বন্ধুত্ব ও সহযোগীতার সম্পর্ক বজায় রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সকল নারী রাষ্ট্রদূত এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার নারী প্রধানগনের পক্ষে বিশেষ বক্তা হিসেবে রাষ্ট্রদূত মিজ সামিনা নাজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে উপস্থিত সকলকে উষ্ণ অর্ভ্যথনা এবং মাননীয় ভাইস প্রেসিডেন্টকে সকলের পক্ষ থেকে তিনি ফুলের তোড়া দিয়ে অভিনন্দন জানান। তিনি তাঁর বক্তব্যে জোড় দিয়ে বলেন যে, বিশ্বে নারী এবং পুরুষের সমান অধিকার এবং দায়িত্ব রয়েছে। নারীর ক্ষমতায়ন একটি যৌথ দায়িত্ব এবং যখন নারীর ক্ষমতায়ন হয় তখন সমাজ উপকৃত হয় এবং তাদের পরিবার, কম্যুনিটি এবং জাতির জন্য তারা অর্থপূর্ণ অবদান রাখে।
ভিয়েতনামে নিযুক্ত বাংলাদেশের প্রথম নারী রাষ্ট্রদূত হিসাবে মান্যবর রাষ্ট্রদূত নারীর অগ্রগতি ও ক্ষমতায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিশেষ অগ্রগতি ও অর্জন উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবচেয়ে দীর্ঘ সময়-এক নাগাড়ে ১৪ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালনের অন্যতম রেকর্ড গড়েছেন। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের স্পীকার একজন নারী। নারী অধিকার শুধু সাংবিধানিকভাবেই নয় বরং নারী অধিকার রক্ষায় কঠোর আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্ব অর্থনীতির বৃহৎ ৩৫তম দেশ- নারীরা রাজনীতি, শিক্ষা, ব্যবসা, আইন ও বিচার, কূটনীতি, উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও গবেষণা, খেলাধুলা, সংস্কৃতি, মিডিয়া, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনী এবং অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে অবদান রাখার মাধ্যমে বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে উন্নীত করতে কাজ করে যাচ্ছে।
মান্যবর রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন যে, CEDAW অথবা বেইজিং প্লাস আলোচনায় অংশগ্রগণ অথবা জাতিসংঘ ব্যবস্থার জেন্ডার মূলধারায় অথবা নারী দ্বন্ধময় পরিস্থিতিতে নারীর অগ্রগতি ও ক্ষমতায়নের ইস্যুতে জাতিসংঘে বাংলাদেশের অগ্রণী ভুমিকা রয়েছে। ২০০০ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য থাকা অবস্থায় ২০০০ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির সময় প্রথমবারের মত সংঘাত পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের ইতিহাসে সর্বপ্রথম জাতিসংঘ নিরাপত্তা কাউন্সিল রেজ্যুলেশন ১৩২৫ Ò Women, Peace & Security” উত্থাপন এবং পরবর্তীতে ৩১ অক্টোবর ২০০০ সালে কার্যকর হয়। রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ এই রেজ্যুলেশনের ফলোআপ ২০০১ সালে নিউইয়র্কে কানাডিয়ান স্থায়ী মিশন কর্তৃক আয়োজিত এই রেজ্যুলেশনের ১ম বার্ষিকী হতে নিবিড়ভাবে Ò Friends of 1325Ó হিসেবে যুক্ত থেকে পরবর্তী চার বছর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জাতিসংঘে বিশেষ অবদান রাখেন।
তিনি তাঁর বক্তব্যে, ভিয়েতনামে সকল ক্ষেত্রে জেন্ডার সমতা বাস্তবায়নের প্রশংসা করেন। নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়নের জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের সাথে সাথে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক নারী দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়। তিনি বিশ^ব্যাপী সংঘাত ও সংকটময় পরিস্থিতিতে নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা এজেন্ডা জোড়দার করার জন্য নারী-পুরুষকে হাতে হাত রেখে কাজ করা, সংঘাতকে নিরুৎসাহিত করা এবং নারীকে সকল সংঘাতমত পরিস্থিতি থেকে রক্ষার জন্য কাজ করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
ভিয়েতনামে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মিজ সামিনা নাজ কর্তৃক প্রদত্ত বিবৃতি মাননীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট ম্যাডাম ভু থি আন জুয়ান এবং উর্ধ্বতন নারী নেত্রীগণ সাদরে গ্রহন করেন। পরবর্তীতে ভিয়েতনামে জাতিসংঘের আবাসিক কো-অর্ডিনেটর তাঁর বক্তৃতায় মান্যবর রাষ্ট্রদূতের বিবৃতির প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মিজ সামিনা নাজ কর্তৃক প্রদত্ত বিবৃতি, সংক্রান্ত একটি নিবন্ধ ভিয়েতনামের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত ইংরেজী দৈনিক “The Gioi and Vietnam”-তে প্রকাশিত হয়। এ সংক্রান্ত কিছু ছবি এতদসঙ্গে সংযুক্ত করা হলো। ভিয়েতনামের জাতীয় দৈনিকে এ সংক্রান্ত প্রকাশিত খবরের লিংক সংযুক্ত করা হলো।
ii) https://vov.vn/chinh-tri/pho-chu-tich-nuoc-tiep-khach-quoc-te-nhan-ngay-83-post1006217.vov