২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ম্যানচেষ্টার:
বাংলাদেশ সহকারী হাই-কমিশন, ম্যানচেষ্টার যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘মহান শহিদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৩’ পালন করেছে।
সহকারী হাই-কমিশন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার অনুষ্ঠান মূলত ০৫(পাঁচটি) ধাপে পালন করেছেঃ প্রথম পর্বে ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাত ১২ ঘটিকায় বাংলাদেশের বাইরে নির্মিত (ওল্ডহ্যাম, ম্যানচেস্টার) প্রথম শহিদ মিনার-এ সহকারী হাই-কমিশনার কাজী জিয়াউল হাসান শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করেছেন।
দ্বিতীয় পর্বের শুরুতেই চ্যান্সারীতে শহিদ দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয় পতাকা অর্ধনির্মিত করা হয়, এক মিনিট নীরবতা পালন, মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ এবং শহীদ দিবসের তাৎপর্যের উপর বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
তৃতীয় পর্বে ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০ ঘটিকায় সহকারী হাই-কমিশনার কাজী জিয়াউল হাসান ম্যানচেষ্টারস্থ ওল্ডহ্যামে বিভিন্ন স্কুলের শিশু-কিশোর, স্থানীয় বৃটিশ-বাংলাদেশী গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং নির্বাচিত বৃটিশ সরকারের প্রতিনিধিবর্গের উপস্থিতিতে প্রভাত ফেরীতে অংশগ্রহণ করেন এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের পটভ‚মি তুলে ধরেন।
চতুর্থ পর্বে চ্যান্সারী ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কর্মকর্তাসহ সম্মানিত ব্রিটিশ-বাংলাদেশী নাগরিকগণ ও কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী উপস্থিত ছিলেন। অতিথিবৃন্দ ও বৃটিশ-বাংলাদেশী নাগরিকদের অংশগ্রহণে ভাষা আন্দোলনের উপর বিশেষ প্রাম্যণ্য চিত্র প্রদর্শন ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা এবং শহিদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের উপর তাৎপর্য উপস্থাপন করেন।
সহকারী হাই-কমিশনার কাজী জিয়াউল হাসান সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে শাহাদাত বরণকারী সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।সহকারী হাই-কমিশনার উল্লেখ করেন যে, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন বাঙালীর স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম ধাপ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলার জনগণের স্বাধীনতা অর্জনের একটি প্রারম্ভিক প্রক্রিয়া; বঙ্গবন্ধু উপলব্দি করেছিলেন যে, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতাই বাঙ্গালীর স্বাধীকার আন্দোলনকে বেগবান করবে। তিনি উল্লেখ করেন যে, বাংলার জনগণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৫২ এর চেতনায় উদ্ধৃত হয়ে ১৯৭১ এ স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে, ফলশ্রুতিতে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়; বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি, জনগণের জীবন মান বৃদ্ধি, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় ও বিচক্ষণ নেতৃত্বে সমগ্র বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান আজ অত্যন্ত সম্মানের। বিশ্বদরবারে বাংলাদেশ একটি দায়িত্বশীল ও প্রগতিশীল রাষ্ট্র এবং উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিক্রমায় দেশ, ভাষা ও জাতীয়তাবাদে উদ্ধুদ্ধ করে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ আরো বেগবান হচ্ছে মর্মে সহকারী হাই-কমিশনার উল্লেখ করেন।
পঞ্চম পর্ব: অমর একুশে এবং স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ সহকারী হাই-কমিশন, ম্যানচেষ্টার এবং স্থানীয় স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান কৃষ্ণচ‚ড়ার যৌথ উদ্যোগে আগামী ০৫ মার্চ ২০২৩ তারিখ সকাল ১১ ঘটিকা থেকে বিকাল ৪ ঘটিকা পর্যন্ত ম্যানচেষ্টার আর্ট গ্যালারীতে প্রথম বারের মতো ‘বই মেলা ও সাহিত্য সভা-২০২৩’ আয়োজন করা হচ্ছে। দিনব্যাপী উক্ত বই মেলা ও সাহিত্য সভায় ভাষা আন্দোলন এবং স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়ে বিভিন্ন রকমের বইয়ের মেলা এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।