ম্যানচেষ্টার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩:
লিডস সিটি কাউন্সিলের লর্ড মেয়র, কাউন্সিলর আল গার্থওয়াইটের আমন্ত্রণে সহকারী হাই-কমিশনার কাজী জিয়াউল হাসান গত ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে দিন-ব্যাপী লিডস সফর করেন। সফরকালে তারা সিভিক হলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা এবং বিনিয়োগ বিষয়ে মত-বিনিময় সভা এবং দিন-ব্যাপি বাংলাদেশ বিষয়ক বিভিন্ন সভা-সেমিনার যোগদান করেছেন। দিন-ব্যাপী এ আয়োজেন লিডস সিটি কাউন্সিলের লর্ড মেয়র ছাড়াও ডেপুটি লিডার কাউন্সিলর জোনাথন প্রিওর, প্রাক্তণ লর্ড মেয়র কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইকবাল, কাউন্সিলর আব্দুল হান্নানসহ সিটি কাউন্সিলের প্রতিনিধি এবং বৃটিশ-বাংলাদেশী ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সিটি কাউন্সিলের সিভিক হলে স্বাগতিক অনুষ্ঠানে সহকারী হাই-কমিশনার লর্ড মেয়র, কাউন্সিলরবৃন্দ ও লিডস সিটি কাউন্সিলের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে লিডস ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি, সম্ভাব্য বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ, জীবাশ্ম ও নবায়নযোগ্য জ্বালানীতে প্রযুক্তি হস্তান্তর, গবেষণা ও উন্নয়ন এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে অধিকতর সহযোগিতার বিষয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়। বিশেষ করে শিক্ষা ক্ষেত্রে অধিকতর সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সাথে লিডস সিটি কাউন্সিলের মাধ্যমে লিডসের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্ক স্থাপনে ফলপ্রসূ আলোচনা করা হয়। লিডস সিটি কাউন্সিল এ বিষয়ে সহকারী হাই-কমিশনের সাথে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবেন মর্মে সহকারী হাই-কমিশনারকে অবহিত করেন।
সহকারী হাই-কমিশনার কাজী জিয়াউল হাসান উল্লেখ করেন যে, রূপকল্প-২০৪১ অনুযায়ী উন্নত বাংলাদেশ রূপান্তরের লক্ষ্যে জ্ঞানভিত্তিক বিনিয়োগ, টেকসই প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনা পর্যালোচনার কোনো বিকল্প নেই। লিডস এ বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জ্ঞানভিত্তিক সহযোগিতা বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং লিডস-এর বিশ্বদ্যিালয়সমূহ উভয়কেই উপকৃত করবে। বাংলাদেশের অথনৈতিক ক‚টনীতির প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সুনীল অর্থনীতি, কৃষি প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং রপ্তানীযোগ্য পণ্যের বহুমুখীকরণে টেকসই বিনিয়োগে তিনি আহ্বান জানান। তিনি শিক্ষা, প্রযুক্তি হস্তান্তর, সুনীল অর্থনীতিসহ অগ্রাধিকারমূলক সেক্টরে বিনিয়োগের জন্য ব্যবসায়ী এবং নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গকে আহ্বান জানান। বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগের মূল আকর্ষণ, নিরাপত্তা এবং বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে আলোকপাত করা হয়।
সহকারী হাই-কমিশনার লর্ড মেয়রের আমন্ত্রণে লিডস এর বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা বিশেষ করে ‘হামারা হেলথি লিভিং সেন্টার’ ‘আশা নেইবারহুড প্রজেক্ট’, ‘শান্তনা উইমেন’স এবং ফ্যামিলি সার্ভিসেস’, ‘নানু স্পোর্টস ফাউন্ডেশন’ এবং ‘কার্ডিগান কমিউনিটি সেন্টার’ পরিদর্শন করেন এবং এ ধরনের দাতব্য ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িত প্রত্যেকের সাথে তিনি এবং লর্ড মেয়র আলাদাভাবে বৈঠক করেন। সহকারী হাই-কমিশনার লিডস এ অবস্থানরত বৃটিশ বাংলাদেশীদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে দাতব্য সংস্থার ভূমিকার ব্যাপক প্রশংসা করেন এবং এ রকম কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সহকারী হাই-কমিশনার লিডস-এ বাংলাদেশী শাহ্ জালাল জামিয়া মসজিদে আগত মুসুল্লীদের সাথে কমিউনিটির স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করেন।
এছাড়া সহকারী হাই-কমিশনার ও লর্ড মেয়র এবং সিটি কাউন্সিলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ লিডস ‘বাংলাদেশ সেন্টার’ পরিদর্শণ করেন এবং বাংলাদেশ সেন্টারের বোর্ড অব ডাইরেক্টরসহ লিডস এর স্থানীয় কমিউনিটি নেতৃবৃন্দদের সাথে বৃটিশ বাংলাদেশীদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে মতবিনিময় করেন।