২৬ মার্চ ২০২৩, রবিবার:
যথাযোগ্য মর্যাদায় এবং উৎসবমুখর পরিবেশে বাংলাদেশ দূতাবাস, স্টকহোম কর্তৃক মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস ২০২৩ উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে ২৬ মার্চ সকালে দিনের শুরুতে দূতাবাস প্রাঙ্গণে মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব মেহ্দী হাসান জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
এর পূর্বে ২০ মার্চ বিকালে স্টকহোমের একটি স্বনামধন্য হোটেলে দিবসটি উপলক্ষে জাঁকজমকপূর্ণ অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। রাষ্ট্রদূত জনাব মেহ্দী হাসান এবং দূতাবাসের কর্মকর্তাগণ অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত অতিথিদের অভ্যর্থনা জানান। এ সময় আবহ সঙ্গীত হিসেবে বিভিন্ন দেশীয় গান বাজানো হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে দুই দেশের জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। এরপর রাষ্ট্রদূত জনাব মেহ্দী হাসান এবং প্রধান অতিথি বক্তব্য প্রদান করেন।
রাষ্ট্রদূত জনাব মেহ্দী হাসান তাঁর বক্তব্যের সূচনায় স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অপরিসীম অবদানের কথা এবং ৩০ লক্ষাধিক শহীদের আত্মত্যাগ এবং ২ লক্ষাধিক মা ও বোনের সম্ভ্রমহানীর বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের কথা বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন। তিনি বলেন ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাঙ্গালি জাতির মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে এ দেশের আপামর জনগণ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন এবং রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছেন। রাষ্ট্রদূত বলেন বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হবে। বাংলাদেশ এর সাম্প্রতিক উন্নয়নের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন তিনি। বাংলাদেশ সুইডেন এর কূটনৈতিক সম্পর্কের পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে তিনি স্বাধীনতার সময় এবং যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের পুনর্গঠনে সুইডেন এর সহায়তার কথা উল্লেখ করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বাংলাদেশ এবং সুইডেনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দিকগুলো তুলে ধরেন এবং সম্পর্কের নতুন দিক উন্মোচন করার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানটিতে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতগণ, সুইডেন এর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সহ বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, কূটনৈতিক কোরের সদস্যবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি সহ নানা পেশাজীবি গুরুত্বপূর্ণ অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে দৃষ্টিনন্দন সাজসজ্জার মাধ্যমে বাংলাদেশ কে তুলে ধরা হয়। প্রদর্শনী কর্ণারে বাংলাদেশের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী পণ্যসামগ্রী প্রদর্শিত হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল জামদানি ও হাতের কাজের পোশাক, হস্ত ও কুটির শিল্প সামগ্রী এবং বাঁশ, বেত, সিরামিক, মাটি, কাঠ, তামা ও পিতলের তৈরী বাংলাদেশী পণ্য। নৈশভোজে উপস্থিত অতিথিবৃন্দকে দেশীয় বিভিন্ন খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। এ সময়ে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, পর্যটন, উন্নয়ন ও সম্ভাবনার ওপর বিভিন্ন প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।