হ্যানয়, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩:
প্রবাসী বাংলাদেশী এবং বাংলাদেশের ভিয়েতনামি বন্ধুদের ভালোবাসায় ও ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত বাংলাদেশ দূতাবাস হ্যানয়, ভিয়েতনাম যথাযোগ্য মর্যাদা ও আনন্দমুখর পরিবেশে আজ (১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে) ৫২তম মহান বিজয় দিবস উদযাপন করে। ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন, ফুল এবং রঙিন আলোকসজ্জায় বর্ণিল সাজে সজ্জিত বাংলাদেশ দূতাবাসের দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে ভিয়েতনাম ও লাওস প্রবাসী বাংলাদেশীবৃন্দ, ভিয়েতনামের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, হ্যানয়ে নিযুক্ত বন্ধুপ্রতীম বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, ভিয়েতনামের বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীসহ অন্যান্য প্রতিনিধি, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও তাদের পরিবারবর্গ অংশগ্রহণ করেন।
সকালে চ্যান্সারি প্রাঙ্গনে চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মোঃ ওয়ারিসুল ইসলাম দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচীর সূচনা করেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারবর্গ, জাতীয় চার নেতা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সকল শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়।
সন্ধ্যায় বিজয় দিবস উদযাপনের দ্বিতীয় পর্বের শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারবর্গ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সকল শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর মহান বিজয় দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীর প্রতীক ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে ভিয়েতনামে বসবাসকারী বাংলাদেশীদের বঙ্গবন্ধুকে ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ধারণ করে নতুন প্রজন্মকে গড়ে তোলার আহবান জানান। মহান বিজয় দিবসের আলোচনায় ভিয়েতনাম পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ও প্রবাসী বাংলাদেশীরা অংশ নেন এবং বাংলাদেশীদেরকে অভিনন্দন ও শুভ কামনা জানান। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লক্ষ শহিদ, বীরাঙ্গনা এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করে চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মোঃ ওয়ারিসুল ইসলাম সমাপনী বক্তব্যে শান্তি আর উন্নয়নের পথে অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সমগ্র দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হবার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। এসময় ২০৪১ সালের মধ্যে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানের জন্য একসাথে কাজ করার অঙ্গীকার করা হয়।
আগত অতিথিবৃন্দ নিজ নিজ মাতৃভাষায় “আমার কাছে বিজয় মানে...” বিষয়ে নিজেদের আবেগ ও প্রত্যাশা লিখে দূতাবাসের বোর্ডে উপস্থাপন করেন, যা পরবর্তীতে প্রকাশিত হবে। সাংস্কৃতিক পর্বে বাংলাদেশের জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত আবৃত্তিকার সাদমান সাদিক ও সেলিনাস রুকাইয়ার কবিতা আবৃত্তি উপস্থিত অতিথিদের বিমোহিত করে। অনুষ্ঠানে বাঙ্গালি জাতির দীর্ঘ মুক্তি সংগ্রাম ও স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের উপর নির্মিত প্রামাণ্য ভিডিওচিত্র প্রদর্শিত হয়। সামগ্রিক বর্ণিল সাজ, মুক্তিযুদ্ধ ও জাগরণের গানের যন্ত্র সংগীত এবং মনোজ্ঞ পরিবেশনা দর্শকদের মাঝে মুক্তি সংগ্রামের আবহ সৃষ্টি করে।
আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক পর্ব শেষে দেশীয় খাবারের মাধ্যমে আমন্ত্রিত অতিথিবর্গকে আপ্যায়িত করা হয়।