তাসখন্দ, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪:
বাংলাদেশ দূতাবাস উজবেকিস্তান উৎসাহ, উদ্দীপনা ও আনন্দের সাথে আজ (১৬ই ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস ২০২৪ উদযাপন করে। প্রবাসী বাংলাদেশী ও দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দের উপস্থিতিতে রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম কর্তৃক দূতাবাস প্রাঙ্গনে জাতীয় সঙ্গীতের ধ্বনিতে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ও মাননীয় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে নির্মিত মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রেরিত ভিডিও প্রদর্শিত হয়। রাষ্ট্রদূত ড. ইসলাম তাঁর সভাপতির বক্তব্যে দিবসটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও তাৎপর্যের উপর আলোকপাত করেন। ৭১’ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে ও জুলাই-আগস্টে আত্মত্যাগকারী শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশ ও জনগণের অব্যাহত সুখ, শান্তি ও উন্নত উন্নতি প্রার্থনা করে এক বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্বের সমাপ্তি ঘটে।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে একই দিনে অপরাহ্ণে দূতাবাসে “ Role of Youth in Shaping the World” শীর্ষক প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়, যেখানে উজবেকিস্তানের সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ ব্যবসায়িক, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও মিডিয়া অঙ্গনের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রদূত ড. ইসলামের সঞ্চালনায় প্যানেল আলোচনায় বক্তব্য রাখেন ওরিয়েন্টাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর ড. রিকসিয়েভা গুলচেখরা, জার্নালিজম ও ম্যাস কমিউনিকেশন বিশ্ববিদ্যায়ের ভাইস-রেক্টর ড. রাসিদভ সানজারবেগ, ডীপলোম্যাসি একাডেমির ডীন ডানিউর উমারভ, উজবেকিস্তান ইকোনোমিক অ্যাসোসিয়েসনের চেয়ারম্যান মুখতার উমারভ এবং তাসখন্দ টাইমস পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ইউসুপোভ আকবর। বক্তাগণ তারুণ্য শক্তি, উদ্যম ও সৃষ্টিশীলতাকে কার্যকরীভাবে কাজে লাগিয়ে জাতীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলা করে বিশ্ব শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধ প্রতিষ্ঠায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনায়ন সম্ভব বলে মতামত প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ উজবেকিস্তানের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরো অর্থবহ ও ফলপ্রসূ করতে দু’দেশের তরুণ সম্প্রদায়ের মধ্যে শিক্ষা-সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও টেকনোলজি বিষয়ক সহযোগিতা ও বিনিময় বৃদ্ধির উপর তাঁরা জোর গুরুত্ব আরোপ করেন।
প্যানেল আলোচনার শুরুতে রাষ্ট্রদূত ড. ইসলাম স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাদের অসীম সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয় ঘটেছিল। তিনি বন্ধু প্রতিম জনগণ, বিশেষ করে উজবেকিস্তানের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন যারা ইতিহাসের কঠিন সময় বাংলাদেশকে সহযোগিতা ও সমর্থন করেছিলে্ন। রাষ্ট্রদূত ড. ইসলাম মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউনুস এর নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রেক্ষাপট ও পটভূমি বর্ণনা করে বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত, সুখী, সমৃদ্ধশালী, আধুনিক বাংলাদেশ গঠনে সরকারের দৃঢ় প্রত্যয় ও প্রতিশ্রুতির কথা পুন:ব্যক্ত করেন।
প্যানেলে আলোচনা শেষে উজবেকিস্তান ও বাংলাদেশী জনপ্রিয় শিল্পীদের পরিবেশনায় বাংলাদেশের দেশাত্মবোধক সংগীত ও নৃত্যের সমন্বয়ে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ হয়, যা দর্শকদের ভূয়সী প্রশংসা কুঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার দ্বারা আগত আতিথিবৃন্দের আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচির সমাপ্তি ঘটে।