মাস্কাট, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪:
বাংলাদেশ দূতাবাস, মাস্কাট এ যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাব-গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ২১ শে ফেব্রুয়ারি ‘মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ পালিত হয়েছে। মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব মোঃ নাজমুল ইসলাম মহোদয় এর সভাপতিত্বে মাস্কাটে বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উক্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানের সূচনাতে জাতীয় সংগীত পরিবেশনার সাথে মান্যবর রাষ্ট্রদূত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং পরে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন। এরপর দূতাবাসের শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্যায়ে পবিত্র কোরআন, পবিত্র ত্রিপিটক ও পবিত্র গীতা থেকে পাঠ করা হয়। পরে দিবসটি উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণীসমূহ পাঠ করে শোনানো হয়। এরপর মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-এর গুরুত্ব ও তাৎপর্যের উপর আলোচনা অনুষ্ঠান শুরু হয়। দিবসটির তাৎপর্য নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনায় ওমানের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।
মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব মোঃ নাজমুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যের শুরুতে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন সকল ভাষা শহিদদের ও ভাষা অন্দোলনের সৈনিকদের। তিনি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট তাঁর পরিবারের সকল শহীদদের এবং ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে 30 লক্ষ শহীদ, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করেন। তিনি বলেন বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন বাঙালির জাতির ইতিহাসে একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ মুহূর্ত। ভাষা শহিদদের সর্বোচ্চ আন্তত্যাগের বিনিময়ে আমরা আমাদের মাতৃভাষা বাংলার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়েছি, ঘটেছে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উন্মেষ। যার পথ ধরে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যদিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। তিনি শোকের ও গৌরবের এই দিনটির জাতিসংঘের UNESCO কর্তৃক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি বাঙ্গালির জাতীয় জীবনে এক অসামন্য অর্জন হিসেবে তুলে ধরেন। তিনি বাংলা ভাষার মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে এবং সকল ভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকাতে সবাইকে অনুরোধ জানান। তিনি বিদেশের মাটিতে দেশের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে ওমান প্রবাসী বাংলাদেশীদের ওমানের আইন ও নিয়ম নীতি সম্পূর্ণভাবে মেনে চলতে আহবান জানান। পরে মহান ভাষা আন্দোলন ও ভাষা শহিদদের উপর নির্মিত প্রামণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয় ও ভাষা আন্দোলনের সকল শহদিদের আত্নার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
এসময় প্রথমবারে মত ওমান প্রবাসী ৪৬ জন কৃতি বাংলাদেশীকে দূতাবাসের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়। আগত অতিথিদের আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।