দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাসিলিয়াতে অবস্থিত বাংলাদেশের একমাত্র দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় বর্ণিল পরিবেশে মহান বিজয় দিবস-২০২৩ পালিত হয়েছে। জাতীয় সঙ্গীতের সাথে রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা কর্তৃক জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সূচিত হয় মহান বিজয় দিবস-২০২৩ উপলক্ষ্যে দূতাবাসের আয়োজন। এ সময় দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী সপরিবারে এবং সবান্ধব উপস্থিত ছিলেন।
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী, স্বাধীনতার স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন মান্যবর রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মহান মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ শহিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। মহান বিজয় দিবস-২০২৩ উপলক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বিশেষ বাণী পাঠ করেন মান্যবর রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা এবং মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করেন দূতালয় প্রধান।
বিজয় দিবসের তাৎপর্যকে প্রতিপাদ্য করে রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা তাঁর বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ উৎসর্গকারী ত্রিশ লক্ষ শহিদ এবং ৭১-এ দেশজুড়ে নির্বিচারে গণহত্যা ও পাশবিক নির্যাতনের বেদনাময় ঘটনাপ্রবাহ স্মরণ করেন। পাশাপাশি বিশ্বসভায় বাংলাদেশের এই রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানে বঙ্গবন্ধুর অবিস্মরনীয় অবদানের উপর আলোকপাত করেন। রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ নামের স্বাধীন সার্বভৌম দেশ উপহার দেবার জন্য বঙ্গবন্ধুকে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে একটি অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে স্বাধীনতার অব্যহিত পরেই কূটনৈতিক অঙ্গনে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক গৃহীত নানা পদক্ষপের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর জীবন, স্বাধীনতা অর্জনে তাঁর অসামান্য ভূমিকা এবং যুদ্ধ বিদ্ধস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধু গৃহীত নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। রাষ্ট্রদূত আরও বলেন বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ আর্থসামাজিক উন্নয়নের রোল মডেল। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী সিদ্ধান্ত ও বিচক্ষণ নেতৃত্বে নারীর ক্ষমতায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার মতো বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ আজ নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে আসীন। রাষ্ট্রদূত নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ ও বলীয়ান হয়ে ২০৪১ সালের মাঝে জ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর `` স্মার্ট বাংলাদেশ `` বিনির্মাণে নিবেদিত হওয়ার আহ্বান জানান।
দূতাবাস পরিবারের শিশুরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত কবিতা আবৃত্তি, গল্প বলা ও নৃত্য পরিবেশন করে। এছাড়াও দূতাবাসের কর্মকর্তা কর্মচারী প্রত্যেকের অংশগ্রহণে একাত্তরের কালজয়ী জয় বাংলা বাংলার জয়, নোঙ্গর তোল তোল সমবেত সংগীত পরিবেশিত হয়।
ভাষা আন্দোলনসহ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আত্মত্যাগকারী, মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদ এবং বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগষ্টের নির্মম হত্যাকান্ডে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল শহিদ-এর আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।