২৫ জুন ২০২৪:
হিমালয়ের লীলাভূমি ভুটানে বাংলাদেশী পাটজাহ পণ্য ছড়িয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে ভুটানে বাংলাদেশ দূতাবাস থিম্পুতে বাংলাদেশী পাটজাত পণ্যের প্রদর্শনী সেন্টার স্থাপিত করেছে। এ উপলক্ষে গতকাল সন্ধ্যায় (২৫ জুন ২০২৪) থিম্পুতে একটি আড়ম্বরপূর্ণ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই কেন্দ্র উদ্বোধন করেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী দাসো শেরিন তোবগে এবং বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, এমপি। অনুষ্ঠানে ভুটানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী, শিল্প, বাণিজ্য এবং কর্মসংস্থান মন্ত্রী, স্বাস্থ্য মন্ত্রী, বিদ্যুৎ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ বিষয়ক মন্ত্রী, পররাষ্ট্র সচিব, প্রাকৃতিক সম্পদ বিষয়ক সচিবসহ ভুটান সরকারের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ভুটান চেম্বার অব কমার্সের নেতৃবৃন্দ, বিপুল সংখ্যক ভুটানী ব্যবসায়ী, আমদানিকারক এবং কারুশিল্প ব্যবসায়ীগণ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিন তোবগে বলেন, পরিবেশ রক্ষায় ভুটান এবং বাংলাদেশ দু’দেশের যৌথ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে থিম্পুতে বাংলাদেশের পাটজাত পণ্যের প্রদর্শনীকেন্দ্র স্থাপিত হলো। এটি শুধু পরিবেশ রক্ষায় নয় দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্যেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, এমপি বলেন-বাংলাদেশী পরিবেশ বান্ধব এবং বায়ো ডিগ্রেডেবল পাটপণ্য ভুটানসহ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়ে পৃথিবীর পরিবেশ রক্ষায় বাংলাদেশের অঙ্গীকার পূরণের পথে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। সে লক্ষ্যে প্রথমবারের মত বিদেশে বাংলাদেশের পাটজাত পণ্যে প্রদর্শনী কিন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে ভুটান-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব আরো সুদৃঢ় হলো। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ভুটানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শিবনাথ রায়। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের পরিবেশ বান্ধব পাটজাত পণ্যকে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আহবানকে বাস্তবায়ন করতে আমরা থিম্পুতে এই কেন্দ্র স্থাপন করেছি। থিম্পুতে বাংলাদেশী পাটজাত পণ্যের প্রদর্শনীকেন্দ্র স্থাপনে দূতাবাসকে বাংলাদেশর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং জুট ডাইভারিসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে। এজন্য তাদের সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী পাটজাতপণ্যের উপর বিশেষ প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন দূতাবাসের কাউন্সেলর সুজন দেবনাথ। তিনি পাটজাত পণ্যের ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষা এবং এই শিল্পে বাংলাদেশের সক্ষমতা তুলে ধরেন।
উদ্বোধন শেষে ভুটানের নেতৃবৃন্দ এবং ব্যবসায়ীগণ প্রদর্শনী কেন্দ্র এবং বাংলাদেশী পাটজাত পণ্য ঘুরে দেখেন। তারা বাংলাদেশের পাট থেকে উৎপন্ন বহুমুখী পণ্য যেমন-ব্যাগ, জুতা, কার্পেট, টিস্যুবক্স, কিচেন আইটেম, পোশাক, অফিস ফাইল, কনফারেন্স ফাইল, কলমদানী এবং গৃহসজ্জার বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী দেখে অভিভূত হন। তারা অচিরেই ভুটানে বাংলাদেশী পাটজাত পণ্যের একটি স্থায়ী বাজার গড়ে উঠবে বলে মতামত প্রদান করেন।
দূতাবাস সূত্রে জানা যায় যে, অদূর ভবিষ্যতে পণ্যের পরিমাণ এবং সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে। ভুটানের বিভিন্ন শহরের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে এই প্রদর্শনী কেন্দ্রে বিভিন্ন সময়ে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এর ফলে ভুটানের বিভিন্ন শহরে বাংলাদেশী পাটজাহ পণ্যের বাজার গড়ে উঠবে।