১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার:
যথাযোগ্য মর্যাদায় এবং উৎসবমুখর পরিবেশে বাংলাদেশ দূতাবাস, স্টকহোম কর্তৃক মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস ২০২৪ উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে ২৬ মার্চ সকালে দিনের শুরুতে দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
পরবর্তীতে ১৯ এপ্রিল ২০২৪ বিকালে স্টকহোমের একটি স্বনামধন্য হোটেলে দিবসটি উপলক্ষে জাঁকজমকপূর্ণ অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটিতে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতগণ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, সুইডেন এর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সহ বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, কূটনৈতিক কোরের সদস্যবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি সহ বিভিন্ন পেশাজীবীর মানুষ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রদূত জনাব মেহ্দী হাসান এবং দূতাবাসের কর্মকর্তাগণ অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত অতিথিদের অভ্যর্থনা জানান। অনুষ্ঠানের শুরুতে দুই দেশের জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। এরপর রাষ্ট্রদূত জনাব মেহ্দী হাসান এবং প্রধান অতিথি বক্তব্য প্রদান করেন।
রাষ্ট্রদূত জনাব মেহ্দী হাসান তাঁর বক্তব্যের সূচনায় স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অপরিসীম অবদানের কথা এবং ৩০ লক্ষাধিক শহীদের আত্মত্যাগ এবং ২ লক্ষাধিক মা ও বোনের সম্ভ্রমহানীর বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের কথা বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন। তিনি বলেন ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাঙ্গালি জাতির মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে এ দেশের আপামর জনগণ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং নয় মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের বিনিময়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনে। রাষ্ট্রদূত বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সারা বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হবে। নিমন্ত্রিত অতিথিদের সামনে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ এর সাম্প্রতিক উন্নয়নের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ- সুইডেন এর কূটনৈতিক সম্পর্কের পঞ্চাশ বছর পূর্তি এবং স্বাধীনতার সময় এবং যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের পুনর্গঠনে সুইডেন এর সহায়তার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বাংলাদেশ এবং সুইডেনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দিকগুলো তুলে ধরেন এবং সম্পর্কের নতুন দিক উন্মোচন করার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। রাষ্ট্রদূত অনুষ্ঠানে উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এবং Friends of Liberation War of Bangladesh সম্মাননা প্রাপ্তদের কে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেন।
অনুষ্ঠানের শেষভাগে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার আয়োজন করা হয়। এর পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন সাজসজ্জার মাধ্যমে বাংলাদেশ কে তুলে ধরা হয়। প্রদর্শনী কর্ণারে বাংলাদেশের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী পণ্যসামগ্রী প্রদর্শিত হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল জামদানি ও হাতের কাজের পোশাক, হস্ত ও কুটির শিল্প সামগ্রী এবং বাঁশ, বেত, সিরামিক, মাটি, কাঠ, তামা ও পিতলের তৈরী বাংলাদেশী পণ্য। নৈশভোজে উপস্থিত অতিথিবৃন্দকে দেশীয় বিভিন্ন খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। এ সময়ে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, পর্যটন, উন্নয়ন ও সম্ভাবনার ওপর বিভিন্ন প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।