করাচি, ১৭ মার্চ ২০২৪ঃ
বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন, করাচি অদ্য রোজ রবিবার, ১৭ মার্চ ২০২৪ তারিখে যথাযোগ্য মর্যাদা ও অত্যন্ত ভাবগাম্ভীর্যের সাথে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ১০৪ তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস-২০২৪ উদযাপন করে।
সকাল সাড়ে আট ঘটিকায় উপ-হাইকমিশনার এস. এম. মাহবুবুল আলম কর্তৃক জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। অতঃপর উপ-হাইকমিশনার মিশনের সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণীসমূহ পাঠ করা হয়। দিবসের উপর দুইটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রথম সচিব মোঃ আরিফ এলাহী এর সঞ্চালনায় এবং উপ-হাইকমিশনার এস.এম. মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে জাতীয় শিশু দিবস-২০২৪ এর প্রতিপাদ্য বিষয় Òবঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ধরে, আনব হাসি সবার ঘরে” এর উপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
উপ-হাইকমিশনার এস.এম. মাহবুবুল আলম তাঁর বক্তব্যের শুরুতে বিনম্র শ্রদ্ধা এবং কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যাঁর বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। তিনি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন জাতীয় চার নেতা, ত্রিশ লক্ষ শহিদ, সম্ভ্রমহারা দুই লক্ষ মা-বোন এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাঁদের মহান আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন করে।
উপ-হাইকমিশনার বলেন, বাল্যকাল থেকেই জাতির পিতা ছিলেন নির্ভীক, দয়ালু, পরোপকারী ও গভীর দেশপ্রেমিক। কিশোর কাল থেকেই তাঁর ভিতর নেতৃত্বের গুণাবলি বিকাশ লাভ করতে থাকে। বাংলার নিপীড়িত, শোষিত, বঞ্চিত ও অবহেলিত মানুষের অধিকার ও মর্যাদা আদায়ে তিনি ছিলেন সদা সোচ্চার। বাঙালি জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করার নেতৃত্বে তিনি ছিলেন অগ্রণী ভূমিকায়। ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৫৮-এর সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ৬২ এর শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ৬৬ এর ছয় দফা, ৬৮-এর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ৬৯ এর গণঅভ্যূত্থান এবং ৭০ এর নির্বাচনসহ প্রতিটি আন্দোলনে তিনি ছিলেন নেতৃত্বস্থানীয়। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য ও দূরদর্শী নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ অর্জন করে মহান স্বাধীনতা।
জাতীয় শিশু দিবস-২০২৪ প্রাক্কালে উপ-হাইকমিশনার উল্লেখ করেন যে, জাতির পিতা শিশুদের গভীরভাবে ভালোবাসতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ আর শিশুরাই মানুষের মত মানুষ হয়ে তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। শিক্ষিত জাতি গড়ে তুলতে, শিশু শিক্ষার বিকাশ নিশ্চিত করতে তাই অর্থনৈতিক অসংখ্য চ্যালেঞ্জ থাকা সত্তে¡ও যুদ্ধ-বিধস্ত বাংলাদেশে জাতির পিতা প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করেন। আর তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকার কর্তৃক গৃহীত যুগান্তকারী পদক্ষেপের কারণে আজ দেশের প্রায় ১০০% শিশু স্কুলে যায়।
দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরা, বাংলাদেশের ইতিহাস এবং বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে জাতির পিতার ভূমিকা, বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, খেলাধুলা ইত্যাদি তুলে ধরে শিশু-কিশোরদের জন্য ১৭ মার্চ সারাদিনব্যাপি একটি শিশু-কিশোর আনন্দ-মেলার আয়োজন করা হয়।