ইসলামাবাদ, ১০ জানুয়ারি ২০২৪:
ইসলামাবাদস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন আজ যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদযাপন করেছে। এ উপলক্ষে চ্যান্সারি ভবনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, বাণীপাঠ, আলোচনা, বিশেষ মোনাজাত ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
দিবসের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। আলোচনা পর্বে হাইকমিশনের কর্মকর্তাগণ বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের ইতিহাস ও তাৎপর্য তুলে ধরেন।
হাইকমিশনার মোঃ রুহুল আলম সিদ্দিকী বক্তব্যের শুরুতেই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ ৯ মাস ১৪ দিন পাকিস্তানের কারাগারে বন্দিজীবন শেষে ১৯৭২ সালে ১০ জানুয়ারি স্বাধীন—সার্বভৌম বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের বিজয় পূর্ণতা লাভ করে। তিনি আরও বলেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রাম পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রেই বঙ্গবন্ধু নেতৃত্ব দিয়েছেন। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করার পরপরই পাকিস্তানি বাহিনী জাতির পিতাকে গ্রেফতার করে অজ্ঞাত স্থানে কারান্তরীণ করে রাখে। পাকিস্তানের সামরিক আদালতে প্রহসনের বিচারে ফাঁসির আসামী হিসেবে মৃত্যুর প্রহর গুণতে গুণতেও তিনি বাঙালির জয়গান গেয়েছেন।
হাইকমিশনার বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করেন। তাঁর বলিষ্ঠ পদক্ষেপে ভারতীয় মিত্রবাহিনী ১৫ মার্চ এর মধ্যে বাংলাদেশ ত্যাগ করে। একই বছর ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে স্বাক্ষর করেন বঙ্গবন্ধু। জাতির পিতার সফল দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক কূটনৈতিক তৎপরতায় বাংলাদেশ বিশ্বের ১২৩টি দেশ এবং ১৬টি আন্তর্জাতিক সংস্থার স্বীকৃতি লাভ করে। তাঁর নেতৃত্বে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ মাত্র সাড়ে তিন বছরেই বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়। ঐতিহাসিক ১০ জানুয়ারিকে বাঙালির স্বপ্নের প্রত্যাবর্তন দিবস হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন।
এরপর জাতির পিতার আত্মার মাগফেরাত এবং বাংলাদেশের সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। সবশেষে ’বিশ্বশান্তির দূত- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।