করাচি, ২৫ মার্চ ২০২৪ঃ
বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন, করাচি ২৫ মার্চ ২০২৪ তারিখে যথাযোগ্য মর্যাদা ও অত্যন্ত ভাবগাম্ভীর্যের সাথে গণহত্যা দিবস-২০২৪ পালন করে।
পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়। এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ২৫ টি মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয় এবং দূতাবাসের সকল বাতি নিভিয়ে এক মিনিটের জন্য প্রতিকী ব্লাকআউট পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণীসমূহ পাঠ করা হয়। দিবসের উপর প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রথম সচিব মোঃ আরিফ এলাহীর সঞ্চালনায় এবং উপ-হাইকমিশনার এস.এম. মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে গণহত্যা দিবস-২০২৪ এর উপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
উপ-হাইকমিশনার এস.এম. মাহবুবুল আলম তাঁর বক্তব্যের শুরুতে বিনম্র শ্রদ্ধা এবং কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যাঁর বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। তিনি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন জাতীয় চার নেতা, ত্রিশ লক্ষ শহিদ, সম্ভ্রমহারা দুই লক্ষ মা-বোন এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাঁদের মহান আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন করে। তিনি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ২৫ মার্চ ১৯৭১ এর কালো রাত্রিতে শহীদ হওয়া বীর সন্তানদের, যাদের তাজা রক্তের শপথ বীর বাঙালিদের অস্ত্রধারণ করে স্বাধীনতা অর্জন না করা পর্যন্ত জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেছিল।
উপ-হাইকমিশনার আরো বলেন, মধ্য রাতে পাকিস্তানি সৈন্যরা সাঁজোয়া ট্যাঙ্ক নিয়ে Òঅপারেশন সার্চ লাইটÓ পরিচালনা করে ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালিদের হত্যা করতে শুরু করে। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করে। এর অব্যবহিত পূর্বেই জাতির পিতা স্বাধীনতার চূড়ান্ত ঘোষণা বার্তা দিয়ে যান। দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র যুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ শহিদ হন, ২ লাখ মা-বোন সম্ভ্রম হারান এবং গোটা দেশ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। অবশেষে ১৬ই ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
উপ-হাইকমিশনার উল্লেখ করেন যে, একাত্তরের বীভৎস গণহত্যা শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বমানবতার ইতিহাসেও একটি কালো অধ্যায়। এমন গণহত্যা আর কোথাও যাতে না ঘটে, গণহত্যা দিবস পালনের মাধ্যমে সে দাবিই বিশ্বব্যাপী প্রতিফলিত হবে মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পরিশেষে তিনি নিজ নিজ অবস্থান থেকে কার্যকর অবদান রেখেই শুধু একাত্তরের গণহত্যায় তথা মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর সন্তানদের প্রাণের প্রতি চিরন্তন শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি গভীর আশাবাদ ব্যক্ত করেন।