করাচি, ২১ ফেব্রæয়ারি ২০২৪ঃ
বাংলাদেশ উপ হাইকমিশন করাচি যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৪ উদযাপন করেছে।
দিবসের শুরুতেই সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ কালো ব্যাজ ধারণ করেন। অতঃপর জাতীয় সংগীতের সঙ্গে উপ-হাইকমিশনার এস.এম. মাহবুবুল আলম জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও অর্ধনমিত করেন। উপ-হাইকমিশনার, মিশনের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ এবং উপস্থিত সকল প্রবাসী বাংলাদেশীদের নিয়ে শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়। ভাষা শহিদদের সম্মানে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। অতপরঃ দিবসের উপর মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এবং মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণীসমূহ পাঠ করা হয়। বাণী পাঠ শেষে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের উপর তিনটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। অতঃপর উপ-হাইকমিশনার এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রথম সচিব জনাব মোঃ আরিফ এলাহী এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা পর্বে বক্তাগণ মহান শহিদ দিবসের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ও বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। সমাপনী ও সভাপতির বক্তব্যে উপ-হাইকমিশনার এস.এম. মাহবুবুল আলম গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন প্রাণের ভাষা বাংলার অধিকার আদায়ে জীবন উৎসর্গকারী ভাষা শহিদ রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার, শফিউরসহ নাম না জানা বীর শহিদদের। উপ-হাইকমিশনার বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী ত্রিশলক্ষ বীর শহিদদেরকে।
উপ-হাইকমিশনার এস.এম. মাহবুবুল আলম তাঁর বক্তব্যে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস, তাৎপর্য ও গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ছিল একদিকে যেমন আমাদের মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করা ঠিক তেমনি ছিল বাঙালি জাতির হাজার বছরের নিজস্ব জাতিসত্ত্বা, স্বকীয়তা ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র রক্ষার এক মহান আন্দোলন। মহান ভাষা আন্দোলন সমগ্র বাঙালী জাতিকে স্বাধিকার, মুক্তিসংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধে যুগিয়েছে অবিনাশী চেতনা ও অফুরন্ত শক্তি। গভীর দেশপ্রেম ও আত্মমর্যাদার সেই চেতনা এবং অমর একুশের রক্তঝরা পথ বেয়েই ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালী জাতি ত্রিশ লক্ষ শহিদের আত্মাহুতিতে অর্জন করে মহান স্বাধীনতা-স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
উপ-হাইকমিশনার আরো উল্লেখ করেন যে, ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোর ২১ ফেব্রুয়ারিকে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ছিল বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গৌরবের। তিনি গভীর আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ইউনেস্কোর ১৯৩ সদস্য রাষ্ট্রে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” পালনের মাধ্যমে বাংলাদেশের মর্যাদা সমগ্র বিশ্বে আরো সমুন্নত ও গৌরবোজ্জ্বল হবে।
মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত দ্বিতীয় পর্বে বাংলাদেশ, ভাষা আন্দোলন ও মাতৃভাষার উপর বয়সভিত্তিক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় । বিজয়ী এবং অংশগ্রহণকারী সকলের মাঝে পুরস্কার ও সনদ বিতরণ করা হয়।