হংকং, ২৫ মে ২০২৪:
আজ ২৫ মে ২০২৪ তারিখে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, হংকং কর্তৃক কন্স্যুলেট প্রাঙ্গনে উৎসবমুখর পরিবেশে বাঙ্গালির প্রাণের উৎসব ‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩১’ সহ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্ম জয়ন্তী উদ্যাপন করা হয়েছে। কনস্যুলেট এর সকল কর্মকর্তা/ কর্মচারী ও তাঁদের পরিবারবর্গ, শিশু-কিশোর, পরিবারসহ হংকংস্থ বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ, হংকং-এর বাংলাদেশ এসোসিয়েশন-এর কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ স্বত:স্ফুর্তভাবে উক্ত উৎসবে অংশগ্রহণ করেন। দিনের শুরুতে কনসাল জেনারেল, মিজ্ ইসরাত আরার নেতৃত্বে আমন্ত্রিত অতিথিসহ হংকং-এর স্থানীয় চাইনিজদের নিয়ে কনস্যুলেট ভবনের সামনের রাস্তায় বর্ণিল আয়োজনে একটি মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। মঙ্গল শোভাযাত্রায় প্রতীকী স্মারক পেঁচা, বাঘ, ঘোড়া, ফুল ইত্যাদি সম্বলিত ব্যানার/ ফেস্টুন প্রদর্শনী করা হয়।
এরপর পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং পবিত্র গীতা পাঠের মধ্য দিয়ে মূল অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। মান্যবর কনসাল জেনারেল তাঁর বক্তব্যে উপস্থিত সকলকে বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ এর শুভেচ্ছার পাশাপাশি রবীন্দ্র জন্ম জয়ন্তী ও নজরুল জন্ম জয়ন্তীতে সকলকে শুভেচ্ছা জানান। ইউনেস্কো কর্তৃক ২০১৬ সালে বাংলা নববর্ষের অনুষঙ্গ ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ কে ‘Representative list of the Intangible Cultural Heritage of Humanity’তে অন্তর্ভূক্তির কথা উল্লেখ করে কনসাল জেনারেল বলেন, এর মাধ্যমে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের ঐতিহ্য স্বীকৃতি পেয়েছে, যা সকল বাঙ্গালীর জন্য গর্বের এবং আনন্দের। এ উপলক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বানীর উল্লেখ পূর্বক তিনি, দেশাত্ববোধ, জন্মভূমির প্রতি ভালোবাসায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করতে সকলকে আহবান জানান। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম জয়ন্তী পালিত হয়েছে এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম জয়ন্তী আজ দেশব্যাপী পালিত হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় কনস্যুলেট কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এই দুই মহান কবির প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনপূর্বক বাংলা সাহিত্যে তাঁদের অবদানের কথা তুলে ধরেন।
পরবর্তীতে কনস্যুলেটের সদস্যবৃন্দসহ হংকংস্থ বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ ও শিশু কিশোরদের অংশগ্রহণে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়, যেখানে নববর্ষের গান, রবীন্দ্র সংগীত, নজরুল সংগীত ও কবিতা আবৃত্তি করা হয়। এছাড়াও, আগত অতিথিদের বাংলা নববর্ষ পালন উপলক্ষ্যে বাঙ্গালীর রসনাবিলাসের অন্যতম অনুষঙ্গ ২০ পদের ভর্তাসহ পিঠা, মিষ্টি ইত্যাদি দিয়ে আপ্যায়ন এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়। উল্লেখ্য, হংকং-এর ২০১৯ সালের ছাত্র আন্দোলনের পর যেখানে সমাবেশের উপর বিধিনিষেধের প্রেক্ষিতে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ আয়োজনের এই উদ্যোগ গ্রহন করায়, কমিউনিটির পক্ষ থেকে কনস্যুলেটকে বিশেষ ধন্যবাদ দেয়া হয়।