Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

Last updated: 29th November 2021
Press Release

‘Territorial Waters and Maritime Zones (Amendment) Bill, 2021’ বিল মহান জাতীয় সংসদে পাশ

আজ ২৮ নভেম্বর ২০২১ তারিখে ১১ তম জাতীয় সংসদের ১৫ তম অধিবেশনে বহুল প্রতীক্ষিত ‘Territorial Waters and Maritime Zones (Amendment) Bill, 2021’ বিল মহান জাতীয় সংসদে পাশ হয়। মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন, এম.পি। বিলটি পাশের জন্য সকালের অধিবেশনে মহান জাতীয় সংসদে উত্থাপন করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে প্রণীত ঐতিহাসিক ‘Territorial Waters and Maritime Zones Act, 1974’ আইনটিতে বাস্তবতার নিরিখে United Nations Convention on the Law of the Sea (UNCLOS, 1982), আন্তর্জাতিক আইনসমূহ এবং সমুদ্রসীমা নির্ধারণ সংক্রান্ত মামলার রায়সমূহের যথাযথ প্রতিফলন ঘটিয়ে আরও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালের আইনটি প্রয়োজনীয় সংশোধনপূর্বক ‘Territorial Waters and Maritime Zones (Amendment) Bill, 2021’ বিল বিগত ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছিল। বঙ্গোপসাগরের সামুদ্রিক সম্পদের উপর বাংলাদেশের মানুষের সার্বভৌমত্ব ও সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের সমুদ্র সম্পদ সংরক্ষণ, টেকসইভাবে অনুসন্ধান ও আহরণ, সমুদ্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, ব্লু-ইকোনমি বা সুনীল অর্থনীতির সর্বোচ্চ সুফল অর্জন এবং সামগ্রিকভাবে দেশ ও দেশের জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণে ‘Territorial Waters and Maritime Zones (Amendment) Bill, 2021’ বিলটি একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।     

 

সংশোধিত আইনে ৩৬ টি ধারা রয়েছে। ১৯৭৪ সালে প্রণীত বেইজলাইন UNCLOS-১৯৮২ এর আলোকে পুনঃনির্ধারণ করা হয় যা গত ১০ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে “বাংলাদেশ সমুদ্র উপকূলে Baseline পুনঃনির্ধারণ” সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন আকারে বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত হয়েছিল। সংশোধিত আইনে UNCLOS-১৯৮২ এর আলোকে পুনঃনির্ধারিত বেইজলাইন বিবৃত হয়েছে। এছাড়াও, Internal Waters, Territorial Waters, Contiguous Zone, Exclusive Economic Zone (EEZ), Continental Shelf, Area, High Sea সহ মেরিটাইম অঞ্চলসমূহে সম্পদ আহরণে বাংলাদেশের অধিকার বিশদভাবে বিবৃত হয়েছে।   

 

১৯৭৪ সালের আইনটি যুগোপযোগী করার নিমিত্ত আধুনিক মেরিটাইম সংক্রান্ত বিষয়াবলি ও প্রযুক্তি যেমন Remotely Operated Underwater Vehicle (ROV), Autonomous Underwater Vehicle (AUV), Unmanned Underwater Vehicle (UUV) ইত্যাদির সংজ্ঞা সংশোধিত আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

 

বিদেশি জাহাজ বা ডুবোজাহাজের বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশের ক্ষেত্রে ফৌজদারি এক্তিয়ার (Criminal jurisdiction) ও দেওয়ানি এক্তিয়ার (Civil jurisdiction) উভ্য়ই সংশোধিত আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।  

 

১৯৭৪ সালের আইনের Contiguous Zone এর সংজ্ঞা ও সীমা UNCLOS, 1982 এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে সংশোধন করা হয়েছে এবং Contiguous Zone এর ব্যাপ্তি ১৮ থেকে ২৪ মাইল করা হয়েছে।     

 

UNCLOS, 1982-এ ‘Exclusive Economic Zone’-এর উল্লেখ থাকায় সংশোধিত আইনে ‘Economic Zone’-এর পরিবর্তে ‘Exclusive Economic Zone’ ব্যবহার করা হয়েছে এবং Exclusive Economic Zone-এ সকল প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের উপর সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। 

 

১৯৭৪ সালের আইনে Area এবং High Sea সংক্রান্ত কোন ধারা না থাকায় Area-তে সম্পদ আহরণ, উত্তোলন ও জাহাজ পরিচালনার অধিকার ব্যাখ্যা করা হয়েছে। 

 

সংশোধিত আইনে Continental Shelf এর সংজ্ঞা ও সীমা UNCLOS,1982 এবং আন্তর্জাতিক আদালতের মামলার রায় অনুযায়ী সংশোধন করা হয়েছে এবং এই অঞ্চলে Safety Zone নির্ধারণ, সাবমেরিন কেবল ও পাইপলাইন স্থাপন সংক্রান্ত বিধানাবলি সংযোজিত হয়েছে।

 

সংশোধিত আইনে Ocean Governance, Blue Economy, Maritime Cooperation সংক্রান্ত নির্দেশনামূলক বিধিবিধান সংযোজিত হয়েছে এবং বিশেষ করে Marine Scientific Research এর পদ্ধতি ও অনুশাসন সংক্রান্ত বিধানাবলি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

 

১৯৭৪ সালের আইনে সামুদ্রিক দূষণের জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদন্ড শাস্তির বিধান ছিল যা সংশোধিত আইনে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদন্ড অথবা সর্বনিম্ন দুই কোটি টাকা টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।

 

এতদিন চট্রগ্রাম বন্দরে জাহাজে যে সকল চুরি সংঘটিত হত তা Piracy-এর ঘটনা হিসেবে লিপিবদ্ধ হত। সংশোধিত আইনে Theft, Piracy (বাংলা অভিধান অনুসারে জলদস্যুতা), Armed Robbery, Maritime Terrorism-এর সুস্পষ্ট সংজ্ঞা প্রদান পূর্বক এ সকল অপরাধ সংক্রান্ত বিধিবিধান সংযোজন করা হয়েছে।    

 

সংশোধিত আইনে বাংলাদেশের  Territorial Sea বা রাষ্ট্রীয় জলসীমা দিয়ে অন্য দেশের জাহাজ ও ডুবোজাহাজের নির্দোষ অতিক্রমণ (Innocent Passage) সংক্রান্ত বিস্তারিত ধারা যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া, সংশোধিত আইনে Exclusive Economic Zone, Continental Shelf এবং Contiguous Zone-এ কোন বিদেশি জাহাজ বা ব্যক্তি কর্তৃক সংঘটিত অপরাধ বা এতদঅঞ্চলের বিধিবিধান ভঙ্গের জন্য শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।   

 

পাশাপাশি, সংশোধিত আইনে জলদস্যুতার নিমিত্ত ব্যবহৃত জাহাজে পরিদর্শন, আরোহণ, জব্দ, সম্পদ বাজেয়াপ্ত এবং গ্রেফতার সংক্রান্ত বিধিবিধান সংযুক্ত করা হয়েছে।   

 

Internal Waters এবং Territorial Sea-তে Nuclear অথবা Hazardous Wastes নিক্ষেপ করার জন্য সংশোধিত আইনে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।

 

সমুদ্রে যেসব অপরাধ সংঘটিত হয় তা ভিন্নমাত্রিক হওয়ায় পৃথক মেরিটাইম ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করার  বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া, অনেক ক্ষেত্রে সমুদ্রে সংঘটিত অপরাধ বা দুর্ঘটনার সাক্ষী পাওয়া যায়না। এ কারণে অনেক অপরাধের সঠিক বিচার হয়না। তাই  এ ধরণের অপরাধ বা দুর্ঘটনা সংক্রান্ত video, photo বা electronic records-কে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করার বিধান সংশোধিত আইনে সংযোজন করা হয়েছে।   

2021-11-28